‘দুর্নীতি’র তথ্য দিক পিএমও: কমিশন

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের অফিসার সঞ্জীব চতুর্বেদী। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে ২০১৪-২০১৭ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে জমা পড়া দুর্নীতির অভিযোগের কপি চেয়েছিলেন চতুর্বেদী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩১
Share:

রাফাল দুর্নীতি নিয়ে ফাঁপরে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তারই মধ্যে অস্বস্তি বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জমা পড়া দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ করতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও)-কে নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন। ওই সব অভিযোগের ভিত্তিতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা-ও জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। উচ্চ আদালত অন্য কোনও নির্দেশ না দিলে এই তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য কেন্দ্র।

Advertisement

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের অফিসার সঞ্জীব চতুর্বেদী। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে ২০১৪-২০১৭ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে জমা পড়া দুর্নীতির অভিযোগের কপি চেয়েছিলেন চতুর্বেদী। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে কত কালো টাকা ফেরানো হয়েছে এবং সব ভারতীয় নাগরিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকা জমা পড়েছে তা-ও জানতে চান তিনি। ক্ষমতায় আসার আগে বিদেশ থে‌কে কালো টাকা ফেরানো ও প্রত্যেক ভারতীয়ের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এইমসে দুর্নীতিতে এক প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চতুর্বেদী। সরকারের কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে জবাব চেয়েছিলেন তিনি।

সরকারি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট নানা মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়ে দেয় প্রধানমন্ত্রীর দফতর। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ-সহ বাকি বিষয়গুলি সম্পর্কে তারা জানায়, এগুলি ঠিক তথ্য নয়। তথ্যের অধিকার আইনে এই প্রশ্নগুলির জবাব চাওয়া যায় না।

Advertisement

কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে আর্জি জানান সঞ্জীব চতুর্বেদী। কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনার রাধাকৃষ্ণ মাথুর রায় দিয়েছেন, কেন্দ্রের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। চতুর্বেদীর সব প্রশ্নের জবাবই কেন্দ্রকে দিতে হবে।

হরিয়ানায় কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ তোলায় তাঁকে হেনস্থার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন চতুর্বেদী। ইউপিএ সরকারের কমিটি অবশ্য তাঁর অভিযোগে সারবত্তা রয়েছে বলে মেনে নেয়। তাঁকে হেনস্থা করার জন্য দায়ের করা মামলাও তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। পরে এইমস হাসপাতালের মুখ্য ভিজিল্যান্স অফিসারের পদে ছিলেন তিনি। মুখ্য ভিজিল্যান্স অফিসার হিসেবে দুর্নীতি রোধে তাঁর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গুলাম নবি আজাদ। ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে এইমস থেকে অব্যাহতি দিয়ে উত্তরাখণ্ডে ফরেস্ট কনজার্ভেটরের দায়িত্ব দেওয়া হয় চতুর্বেদীকে। তবে দুর্নীতি নিয়ে লড়াই থামাননি তিনি।

আইনি লড়াইয়ের ফলে চতুর্বেদী অভিযোগের কপি হাতে পেলে কংগ্রেসও নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আরও বেশি প্যাঁচে ফেলতে পারবে বলে আশঙ্কা বিজেপি নেতাদের। ইতিমধ্যেই রাফাল দুর্নীতি নিয়ে ফের খোঁচা দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। নরেন্দ্র মোদী ও অনিল অম্বানীর হাত মেলানোর ছবির সঙ্গে শোলে-র ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোড়েঙ্গে’ গানটি জুড়ে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার চালাচ্ছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নিজেই তো চোরেদের সর্দার। এত দিন বিরোধী দলের নেতাদের পিছনে সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরকে লাগিয়ে দিয়ে নিজের দলের নেতাদের বাঁচিয়ে এসেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন