প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা কম্পিউটার বাবা-সহ ৫ সাধুকে

মধ্যপ্রদেশে রয়েছেন ‘কম্পিউটার বাবা!’ তাঁর আছে হেলিকপ্টার আর ল্যাপটপ। লোকে বলে, মাথাও নাক়ি কম্পিউটারের মতো তুখড়, স্মৃতিশক্তিও অসাধারণ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভোপাল শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৫৫
Share:

কম্পিউটার বাবা: নামদেব ত্যাগী

‘বিরিঞ্চিবাবা’ গল্পে ছিলেন ‘রেডিয়ো বাবা’। যাঁর দুই টিকি— একটি ‘পজিটিভ’, একটি ‘নেগেটিভ।’

Advertisement

মধ্যপ্রদেশে রয়েছেন ‘কম্পিউটার বাবা!’ তাঁর আছে হেলিকপ্টার আর ল্যাপটপ। লোকে বলে, মাথাও নাক়ি কম্পিউটারের মতো তুখড়, স্মৃতিশক্তিও অসাধারণ।

এ হেন ‘কম্পিউটার বাবা’-সহ পাঁচ সাধুকে মধ্যপ্রদেশের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিল শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকার। কম্পিউটার বাবা স্বামী নামদেব ত্যাগী ছাড়া আর চার জন হলেন, নর্মদানন্দ মহারাজ, হরিহরানন্দ মহারাজ, মার্সিডিজ-আরোহী ভাইয়ু মহারাজ এবং পণ্ডিত যোগেন্দ্র মহন্ত। ৩১ মার্চ এই পাঁচ সাধুর নেতৃত্বে বৃক্ষরোপণ, জল সংরক্ষণ এবং নমর্দা নদীকে রক্ষার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। মঙ্গলবার সরকারের তরফে জানানো হয়, কমিটির সদস্য হিসেবে পাঁচ সন্ন্যাসীই প্রতিমন্ত্রীর সমান মর্যাদা পাবেন। সাধুদের মুখে এখন শিবরাজের নামে ‘সাধু সাধু’ রব!

Advertisement

অথচ নর্মদার তীরে ছ’কোটি চারাগাছ পোঁতা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছিলেন এই সাধুরাই। চারাগাছ দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং নর্মদার তীরে অবৈধ বালি খাদান বন্ধের দাবিতে ১ এপ্রিল থেকে ১৫ মে-র মধ্যে মধ্যপ্রদেশের প্রতিটি জেলা থেকে ‘নর্মদা ঘোটালা রথযাত্রা’ বের করার কথা ঘোষণা করেছিলেন কম্পিউটার বাবা। এই আন্দোলনের আহ্বায়ক ছিলেন যোগেন্দ্র মহন্ত। চলতি বছরের শেষেই রাজ্যে ভোট। তার আগে সাধুদের ক্ষোভ প্রশমিত করতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: কৃষ্ণসার হত্যার রায় আজ

স্বাভাবিক ভাবেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। কংগ্রেসের অভিযোগ, নির্বাচনে ধর্মগুরুদের ধর্মীয় আবেদন ব্যবহার করতে চাইছে সরকার। কংগ্রেসের মুখপাত্র পঙ্কজ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘এটা চটকদারি রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়। মুখ্যমন্ত্রী ভাবছেন, এই ভাবে তিনি সমস্ত পাপ ধুয়ে ফেলবেন। নর্মদার তীরে পোঁতা ছ’লক্ষ চারাগাছ কোথায় গেল, সেটি যেন সাধুরা তদন্ত করে দেখেন।’’

এ দিন দিল্লিতে সংসদের বাইরে কংগ্রেস নেতা রাজ বব্বরও দাবি করেন, ‘‘ভোটে জেতার জন্য সাধুদের উপর ভরসা করছেন শিবরাজ। ভাবছেন এই সব করে তিনি নির্বাচনে জিতে যাবেন। কিন্তু সেটা অসম্ভব।’’

তবে কংগ্রেসের সমালোচনাকে পাত্তা দিতে রাজি নয় বিজেপি। মধ্যপ্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র রজনীশ অগ্রবাল বরং বলেন, ‘‘সাধু-সন্ন্যাসীদের জন্য কিছু করা হলে কংগ্রেস সেটা কখনও ভাল ভাবে নেয় না। পাঁচ সাধুকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, যাতে নর্মদা রক্ষার কাজটি তাঁরা ভাল ভাবে চালিয়ে যেতে পারেন।’’

বুধবার প্রতিবাদী যাত্রা কর্মসূচি বাতিল করে কম্পিউটার বাবা বলেন, আমাদের দাবি মেনে কমিটি গড়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। এখন আর যাত্রায় বেরনোর কী দরকার!’’ কিন্তু সাধুর কি মন্ত্রীসান্ত্রীর মতো সুযোগ-সুবিধা নেওয়া সাজে? বাবার জবাব, ‘‘সরকারি সুযোগ-সুবিধা না নিলে নর্মদা রক্ষার কাজ করব কী ভাবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন