ধরা পড়ার পর জেল পালানো ৪ বন্দি (ডান দিকে)। এই গর্তই ছিল পালানোর পথ। হাফলঙে। ছবি: পিটিআই।
হাফলং উপ-কারাগারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। ওই সংশোধনাগার থেকে একের পর এক বন্দি পালানোর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগও ছড়াল গোটা জেলায়। অভিযোগ উঠল, উপ-কারাগারে নজরদারির নিয়ে কর্তৃপক্ষ সতর্ক নন। তার জেরেই ওই ধরণের ঘটনা ঘটছে।
ডিমা হাসাওয়ের পুলিশ সুপার ধনজয় পরশুরাম ঘনাবত গত সন্ধেয় সাংবাদিক বৈঠকে মেনে নিয়েছিলেন। তিনি জানান, হাফলং উপ-কারাগারের পরিকাঠামো দুর্বল রয়েছে। তারই সুযোগ নিয়ে চার বন্দি পালিয়ে গিয়েছিল। পুলিশকর্তা আরও জানিয়েছিলেন, উপ-কারাগারের পরিকাঠামো ঠিক করতে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তিনি জানান, সম্প্রতি ওই সংশোধনাগারে তিনটি সান্ত্রি-চৌকি তৈরি করা হয়েছে। বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, বড় সার্চলাইটও। ঘনাবত বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে লোহার রড দিয়ে একটু একটু করে শৌচাগারের দেওয়াল খুঁড়ছিল ওই চার বন্দি। তা কারাগার কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েনি।
প্রশ্ন উঠেছে, লোহার রড বন্দিদের সেলে পৌঁছল কী করে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, জেল থেকে পালানোর ছক তৈরি করেছিল তোলাবাজির অভিযোগে কারাবন্দি রাজু হাসামসা ওরফে কম্যান্ডো। উল্লেখ্য, গত কালই জেলাশাসক অমরেন্দ্র বরুয়া, রাজ্য পুলিশের এডিজিপি (প্রিজনার) জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী ও দক্ষিণ অসম রেঞ্জের আইজি অনুরাগ অগ্রবাল হাফলং উপ-কারাগার পরিদর্শন করেন। গত বছর তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের কারামন্ত্রী গিরীন্দ্র মল্লিক হাফলং উপ-কারাগার পরিদর্শন করে সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কথা বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ কিছুই হয়নি।
হাফলং উপ-কারাগারে বর্তমানে ২৯ জন কট্টর জঙ্গি বন্দি রয়েছে। সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢিলেঢালা থাকার সুযোগ নিয়ে আরও বন্দি পালাতে পারে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।
কারাগার থেকে পালানো ৪ বন্দিকে গত কাল গ্রেফতার করে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, বন্দিরা অভিযোগ করে জেলে তাদের উপর নির্যাতন করেন জেলর এম খাগলারি। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয় না। অসুস্থ হলে মেলে না ওষুধ। নালিশ জানাতে গেলে মারধর করার হুমকি দেন জেলর। বন্দিদের বক্তব্য, জেলর খাগলারিই তাদের পালানোর ফন্দি দিয়েছিল। বিনিময়ে চেয়েছিল ১ লক্ষ টাকা। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ সুপার জানান, ওই বন্দিদের পালাতে কারাগারের কোনও কর্মী সাহায্য করে থাকলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। এডিজিপি (প্রিজনার) জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী জানান, ওই ঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির প্রমাণ মিললে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।