অভব্য মন্তব্য এবং অসংসদীয় আচরণের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে বারবার উঠেছে। এর আগে সংসদে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিতর্ক এড়াতে পারেননি। শুক্রবার লোকসভায় ফের বাদানুবাদে জড়ালেন তিনি। কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবের উপরে কার্যত রে রে করে তেড়ে উঠতে দেখা গেল কল্যাণবাবুকে।
কী থেকে এমন ঘটল? লোকসভার অধিবেশন তখনও শুরু হয়নি। লবিতে কল্যাণবাবুকে দেখে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবের মেয়ে তাঁকে বলেন, ‘‘বিজেপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনারা চুপ কেন? আপনাদের তো ওয়েলে নামতে দেখা যাচ্ছে না! অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকে স্ট্রিট ফাইটার বলেই জানে!’’ এই প্রশ্নেই রেগে ওঠেন কল্যাণ। সংসদ কক্ষে ঢুকে কংগ্রেস নেতা কমল নাথের কাছে অভিযোগ করেন তিনি। দাবি করেন, সুস্মিতা নাকি তাঁকে বলেছেন, ‘সারদা কাণ্ডের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিনিশ হয়ে গেছেন!’ কল্যাণবাবুর বক্তব্য, তিনি সমালোচনা শুনতে প্রস্তুত। কিন্তু দলনেত্রীর বিরুদ্ধে কটাক্ষ শুনতে রাজি নন। এই বাদানুবাদের মাঝেই লোকসভার অধিবেশন মিনিটখানেকের জন্য চালু হয়ে মুলতবি হয়ে যায়। কংগ্রেস সাংসদদের দাবি, এর পর সুস্মিতাদেবী ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিতে নিজেই কল্যাণবাবুর কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে যান। অভিযোগ, তাঁকে অপমান করেন কল্যাণবাবু। সুস্মিতার বাবার প্রসঙ্গও তোলেন। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও মল্লিকার্জুন খার্গের হস্তক্ষেপে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। পরে সুস্মিতা বলেন, ‘‘সারদা প্রসঙ্গে খোঁচা দিইনি। মমতাকে স্ট্রিট ফাইটার বলে তাঁকে লড়াকু নেত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলাম। কিন্তু কল্যাণবাবু যা জবাব দিলেন, তাতে আহত’’
সুস্মিতা প্রথম নন। বিজেপির বাবুল সুপ্রিয় থেকে সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য— কল্যাণবাবুর ‘কুকথা’ থেকে মুক্তি পাননি কেউই। ইউপিএ আমলেও কংগ্রেস সাংসদদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান শ্রীরামপুরের সাংসদ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কনভয় ভেঙে কল্যাণ গাড়ি ঢুকিয়েছিলেন, এমনও অভিযোগ উঠেছিল।
এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘মমতা-মোদী তথা মমো তত্ত্বে চলছে তৃণমূল। তাই ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে মোদীর সমালোচনা করেননি মমতা। তৃণমূলকে পুতুলের মতো নাচাচ্ছে বিজেপি। কখনও সিবিআই তৎপর হচ্ছে, কখনও হাল্কা দিচ্ছে।’’ আজ সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও এ নিয়ে কথা হয় অধীরবাবুর।