Akhilesh Yadav

জাতগণনা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে দ্বন্দ্বে অখিলেশ

অখিলেশ আগেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস এসপি-কে ছ’টি আসন ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরে এসপি-র জেতা আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৩৯
Share:

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। —ফাইল চিত্র।

বিজেপি আগেই তাঁর যাদব ছাড়া অন্যান্য ওবিসি ভোটে ভাগ বসিয়েছে। এ বার জাতগণনার দাবি তুলে কংগ্রেসও ওবিসি ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে চাইছে দেখে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব পাল্টা আক্রমণে গেলেন। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের জাতগণনার দাবিকে ‘মিরাকল’ আখ্যা দিয়ে অখিলেশের মন্তব্য, “এখন সবাই বুঝতে পারছে, অনগ্রসর শ্রেণির ভোট না পেলে সফল হওয়া যাবে না।” কংগ্রেস যে ইউপিএ সরকারের আমলে আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা করেও তার ফল প্রকাশ করেনি, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন অখিলেশ।

Advertisement

এমনিতেই মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস নেতা কমল নাথ সমাজবাদী পার্টিকে কোনও আসন ছাড়তে চাননি। উল্টে অখিলেশের দাবি নিয়ে প্রশ্নের মুখে বলেছেন, “আরে ছাড়ুন অখিলেশ ভখিলেশকে!”

অখিলেশের অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস তাদের মধ্যপ্রদেশে ছ’টি আসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েও একটিও আসন ছাড়েনি। তার উপরে উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাই সমাজবাদী পার্টিকে বিজেপির ‘বি-টিম’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কংগ্রেস ৩১ অক্টোবর লখনউয়ে ওবিসি সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। সেখানে জাতগণনার সঙ্গে মণ্ডল কমিশনের সুপারিশের সঠিক ভাবে কার্যকর হয়েছে কি না, তা নিয়েও আলোচনা হবে।
অখিলেশরা বুঝতে পারছেন, জাতপাতের রাজনীতি করে তাঁরা কংগ্রেসের যে ভোটে ভাগ বসিয়েছিলেন, এখন কংগ্রেস ফের সেই ভোট ফিরে পেতে চাইছে। এই কারণেই বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-য় কংগ্রেসের সঙ্গে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরিক এসপি-র তিক্ততা বাড়ছে। কংগ্রেসের জাতগণনার দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলে অখিলেশ বলেন, “কংগ্রেস এখন জাতগণনা চাইছে, এটাই মিরাকল। কংগ্রেস এখন বুঝতে পারছে, তারা যে ভোটব্যাঙ্ক খুঁজে বেড়াচ্ছে, তা আর তাদের সঙ্গে নেই।”

Advertisement

অখিলেশ আগেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস এসপি-কে ছ’টি আসন ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরে এসপি-র জেতা আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। অখিলেশের বক্তব্য, বিজেপির মতো সংগঠিত দলের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে ইন্ডিয়া জোটে এমন বিভ্রান্তি থাকলে চলবে না। কংগ্রেসের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে অখিলেশ বলেছেন, “কংগ্রেস এ রকম আচরণ করলে কে ওদের পাশে দাঁড়াবে!”

শুধু অখিলেশ যাদব নন। বাম দলের নেতারাও মনে করছেন, কংগ্রেস যে সব রাজ্যে শক্তিশালী, সেখানে কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের কোনও আসন ছাড়তে চাইছে না। সিপিএম রাজস্থানে কংগ্রেসের সঙ্গে দু’একটি আসনে সাহায্য চেয়েছিল। একই ভাবে সিপিআই ছত্তীসগঢ়ে দু’একটি আসন চেয়েছিল। সিপিএম, সিপিআই তেলঙ্গানা নিয়েও কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চেয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস কোনও ভাবেই রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানায় আর কাউকে আসন ছাড়তে নারাজ। ইন্ডিয়া-র অন্য দলগুলির বক্তব্য, এটা ঠিক যে, বিধানসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতার কথা হয়নি। কিন্তু এই নির্বাচনে ‘বিগ ব্রাদার’ হিসেবে কংগ্রেস উদারতা দেখালে লোকসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতার সময়ে আঞ্চলিক দলগুলির থেকে উদারতা আশা
করতে পারত।

সমাজবাদী পার্টির নেতাদের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে হলে উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনে বিজেপির বিজয়রথ থামাতে হবে। তার জন্য কংগ্রেস-সহ সব দলকে অখিলেশের পাশে দাঁড়াতে হবে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা যে ভাবে রাজ্যে অখিলেশকে নিশানা করছেন, সে দিকে আঙুল তুলে এসপি নেতাদের বক্তব্য, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও রাজ্য নেতৃত্ব ভিন্ন সুরে কথা বলছে। মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা রাত একটা পর্যন্ত আলোচনা করেও পরের দিন এসপি-র জেতা আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণা করে দিচ্ছেন। এর কী অর্থ বোঝা উচিত!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন