মিশনরঞ্জন দাস, কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ এবং সতু রায়।
ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই বরাক জুড়ে কংগ্রেস-বিজেপি টানাপড়েন বাড়ছে। আর মাস আট-দশ মাসের মধ্যেই অসম বিধানসভার ভোট। তার আগে ক্ষমতায়ীন কংগ্রেস বিধায়করা শেষ মুহূর্তে কিছু কাজ করার চেষ্টা করছেন। অন্য দিকে, বিরোধী বিজেপি নেতারা, বিশেষ করে আগামী ভোটে বিজেপির টিকিট প্রত্যাশীরা সেই কাজের মধ্যে দুর্নীতি খুঁজে বের করতে উঠেপড়ে নেমেছেন। করিমগঞ্জের রাস্তাঘাটের হাল খুবই খারাপ। তবে ভোট আসছে, এটাই করিমগঞ্জবাসীদের সৌভাগ্য। ইদানীং রাস্তাঘাটের কিছু কিছু কাজ শুরু হয়েছে। তৈরি করা হচ্ছে ফুটপাথও। এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে কংক্রিটের ব্লক। বিজেপি সহ-সভাপতি তথা উত্তর করিমগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক মিশন রঞ্জন দাস অভিযোগ করেছেন, উন্নয়নের নামে আসলে দুর্নীতি হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, যে সব ব্লক ব্যবহার করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। এবং তা কেনা হচ্ছে বর্তমান কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থর নিজের কারখানা থেকে। আজ সেই অভিযোগের জবাব দিতে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি সতু রায় স্বীকার করে নেন ব্যবহৃত কংক্রিট ব্লকের একটি অংশ কংগ্রেস বিধায়কের কারখানা থেকেই কেনা হয়েছে। তবে তাঁর মতে এই পরিমাণ মাত্র ১০ শতাংশ। বাকি মাল অন্য জায়গা থেকে কেনা হচ্ছে। সতুবাবু যুক্তি সাজিয়েছেন, ‘‘মিশনবাবু বিধায়কের অবৈধ কারখানার কথা বলেছেন। তা ঠিক নয়। বৈধ কারখানা থেকেই মাল কেনা হয়েছে।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তাঁর মতো করে যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করেছেন, ‘‘সত্যি সত্যি যদি ব্লক নির্মাণ কারখানার কাগজপত্র না থাকে তাহলে প্রাক্তন বিধায়ক আইনের সাহায্য নিচ্ছেন না কেন? নাকি অযথা রাজনৈতিক উন্মদনা সৃষ্টি করতে এ রকম বক্তব্য উপস্থাপন করছেন?’’ তিনি বলেন, ‘‘শহরের যে সব রাস্তায় ব্লক লাগানো হচ্ছে তার মাত্র দশ শতাংশই বিধায়কের সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি ৯০ শতাংশ ব্লক আনা হয়েছে অন্য জায়গা থেকে।’’ তারপরও যদি ব্লকের মান নিম্ন হয়ে থাকে তাহলে প্রাক্তন বিধায়ক কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না কেন বলে প্রশ্ন তুলেছেন সতু রায়। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, বিজেপি উন্নয়নকে আটকে দিতে চাইছেন। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য সতুবাবুর বক্তব্যকে নস্যাত্ করে দিয়েছেন। এখনই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতার বক্তব্য, ‘‘তথ্য-প্রমাণ নিয়েই আমরা যা বলার বলব। সতুবাবু তাঁর জেলা কংগ্রেস সভাপতির কুর্সি দখলে রাখতে বৃথাই উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়কের তাঁবেদারি করছেন।’’ এই নেতার বক্তব্য, ব্যবহৃত ব্লকের একটি অংশ যে কমলাক্ষবাবুর কারখানা থেকে কেনা হচ্ছে এই অভিযোগ আমাদের ছিল। সতুবাবু তা স্বীকার করে নিয়েছেন।’’