সুষমা স্বরাজ-বসুন্ধরা রাজেকে ঘিরে বিজেপি ও কংগ্রেসের সংঘাতে সংসদের বাদল অধিবেশন এখন বিশ বাঁও জলে।
আর্থিক সংস্কারের পথে এগোতে সংসদে এক গুচ্ছ বিল পাশ করানোর পরিকল্পনা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু কংগ্রেস হুমকি দিয়েছে, সুষমা-বসুন্ধরার ইস্তফা না হলে বাদল অধিবেশন অচল করে দেওয়া হবে। চাপের মুখে মোদী সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্ব এখন কংগ্রেসকে ‘উন্নয়ন বিরোধী’ তকমা দিয়ে পাল্টা প্রচারে যেতে চাইছে। বিজেপি নেতৃত্ব বোঝানোর চেষ্টা করছে, রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে কংগ্রেস উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে। শনিবার সারাদিন মোদী সরকারের মন্ত্রীরা উন্নয়নের দিকে আলোচনার মুখ ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন। নগরোন্নয়নমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেছেন, আগামী বছরের জানুয়ারি থেকেই প্রথম পর্বের স্মার্ট সিটি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। দুপুরে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেন, ১ জুলাই ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের প্রচার শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যেখানে সাইরাস মিস্ত্রি, মুকেশ অম্বানী থেকে দেশ-বিদেশের শিল্পপতিরা নতুন বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করবেন। বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, ‘‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য উন্নয়ন। কিন্তু কংগ্রেস উন্নয়নের কথা ভাবছে না। সব বিষয়ে বিরোধিতা করে বাজার গরম করতে চাইছে।’’
মনমোহন-জমানায় সরকারের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে বিজেপি সংসদ অচল করে রাখত। সে সময় কংগ্রেসও একই ভাবে বিজেপি-কে উন্নয়ন-বিরোধী তকমা দেওয়ার চেষ্টা করত। এ বার বিজেপি সেই একই রণকৌশল নিতে চাইছে। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ পাল্টা আক্রমণে গেলেই যে কংগ্রেস সংসদে গণ্ডগোল বাধাবে না, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।
নতুন বিলের কথা দূরে থাক। লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে এখনই ৬৫টি বিল সংসদের সিলমোহনের অপেক্ষায় ঝুলে রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বিল, পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি বিল তো রয়েইছে। তার সঙ্গে আবাসন নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বিল এবং শ্রম আইন সংস্কারের একগুচ্ছ বিলও রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস যেভাবে সংসদের বাদল অধিবেশন ভেস্তে দিতে মরিয়া, তাতে এই সব বিল আদৌ পাশ করানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংসদীয় বিষয়ক দফতের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু যথেষ্ট চিন্তিত।