লোকসভা ভোটে বাংলায় বামেদের সঙ্গে সমঝোতার বল কংগ্রেসের কোর্টেই ছেড়ে দিয়ে এসেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলে এসেছিলেন, কংগ্রেসকেই এই ব্যাপারে অবস্থান চূড়ান্ত করতে হবে। দু’দলের দুই শীর্ষ নেতার কথার পরে তৎপরতা বাড়িয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এক বর্ষীয়ান নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয় রাখার।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘জেলা সভাপতিদের বলা হয়েছে দ্রুত তাঁদের মতামত লিখিত ভাবে জানাতে।তার পরে আমাদের বক্তব্য এআইসিসি-র কাছে পাঠিয়ে দেব।’’ সমঝোতা নিয়ে মতামত এবং আসনওয়াড়ি পর্যালোচনার রিপোর্টই জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে চেয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। পাশাপাশিই, বামেদের মতো বিজেপি-তৃণমূলকে একসঙ্গে বিঁধে কর্মসূচিও নিচ্ছে তারা। আর ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘আমরা তো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। রাজ্য কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আমাদের কৌশল হবে বিজেপি ও তৃণমূলকে হারানো। এবার ওদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ওরা কী করবে।’’
বিজেপি-বিরোধী সব দলকে এখন পাশে টানছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য কমিটির বৈঠকে দাবি উঠেছে, দলের সাধারণ সম্পাদক অ-বিজেপি দলগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁদের বোঝানো হোক, গণতন্ত্র ও সংবিধানকে অমর্যাদার প্রশ্নে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কোনও ফারাক নেই। এই পথেই জাতীয় রাজনীতিতে ‘একঘরে’ হয়ে পড়ার দশা কাটাতে চায় বামেরা। সেই চেষ্টা শুরুও করেছেন ইয়েচুরি।
রাহুলের সঙ্গে ইয়েচুরির কথা হয়েছিল সোমবার। বিজেডি ও অন্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেন ইয়েচুরি। তাঁদের বলেছেন, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় প্রতারিত মানুষ এখনও টাকা ফেরত পাননি। তৃণমূলের নেতারা যেমন অভিযুক্ত, তেমনই অভিযুক্তদের কেউ কেউ বিজেপিতেও যোগ দিচ্ছেন। দুই দুর্নীতিগ্রস্ত দল নিজেদের মধ্যে ‘ছায়াযুদ্ধ’ করছে। তবে সিপিএম নেতাদের সামনে সমস্যা, বিজেডি থেকে তেলুগু দেশমের মতো বিভিন্ন দলের নেতারাই সিবিআইয়ের নিশানায় রয়েছেন। সকলেই ‘ভীত’। সিবিআইকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলে তাই সকলেই এককাট্টা।