লন্ডনে যাওয়ার আগে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লন্ডনে পা রাখতে না রাখতেই ফেরার আইপিএল কর্তা ললিত মোদীর প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তুলল কংগ্রেস।
আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ললিত এখন ব্রিটেনেই রয়েছেন। কংগ্রেসের দাবি, ‘‘ললিতকে দেশে ফেরাতে চলতি সফরেই সক্রিয় হতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। নইলে বুঝতে হবে ছোটা মোদীকে সাহায্য করছেন বড়া মোদী!’’ লন্ডন সফরে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে সঙ্গী করেননি মোদী। এ নিয়েও আজ কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। ললিতকে ভিসা পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন সুষমা। লন্ডনে ললিত মোদীর অভিবাসনের জন্য সাহায্য করেছিলেন রাজস্থানের প্রাক্তন বিরোধী দলনেত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। এ জন্য গোপনে হলফনামা দিয়েছিলেন তিনি। সেই তথ্য ফাঁস হতেই উভয়ের ইস্তফার দাবিতে সংসদের বাদল অধিবেশন পণ্ড করে দিয়েছিল কংগ্রেস। জাতীয় রাজনীতিতে ললিত মোদী আর আলোচনার বিষয় হিসেবে নেই। তবে পরিকল্পনা মাফিক কংগ্রেস আজ সেই প্রসঙ্গ ফের তুলে এনেছে। সনিয়ার উদ্দেশ্য, প্রধানমন্ত্রীর বিলেত সফরকে ঘিরে হইচইয়ে জল ঢেলে দেওয়া।
দেশজুড়ে অসহিষ্ণুতার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে লন্ডনে ভারতীয়দের একাংশ প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছেন। এই সময়েই রাহুল গাঁধীর পরামর্শে ললিতকে দেশে ফেরানোর দাবিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘এ নিয়ে তিরিশ বার বিদেশ সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরাও বলছেন, মোদীর ২৯টি সফরে ভারতের প্রাপ্তি হয়েছে খুবই নগণ্য। শুধু বিভিন্ন পোজে প্রধানমন্ত্রীর সেলফি ও তাঁর ব্র্যান্ডের প্রচার ছাড়া দেশের উপকার কিছুই হয়নি।’’ কংগ্রেসের কটাক্ষ, ‘‘এ বার অন্তত ললিত মোদীকে দেশে ফিরিয়ে কাজের কাজ কিছু করুন প্রধানমন্ত্রী।’’ রণদীপের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা সফরের সময় সুষমা স্বরাজকে সঙ্গী করেছিলেন। কিন্তু এ বার বিদেশমন্ত্রীকে কেন দেশে রেখে গেলেন, তা বোঝাই যাচ্ছে!’’
কংগ্রেসের অভিযোগ, ক্রিকেট রাজনীতির সূত্রে মোদী-অমিত শাহের সঙ্গে ললিত মোদীর দহরম মহরমের কথা সবাই জানে। তাই ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করে ললিত মোদীকে সাহায্য করতেই জেটলিরা প্রত্যপর্ণের যুক্তি দিচ্ছেন। নইলে ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী ললিত মোদীর হস্তান্তর কোনও জটিল বিষয় নয়। কংগ্রেসের মতে, ললিতকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে ক্ষতি মেরামতের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তার বদলে প্রধানমন্ত্রী যদি প্রত্যার্পণের অজুহাত দেন, তা হলে বুঝতে হবে ‘ছোটা মোদী’-কে সাহায্য করছেন ‘বড়া মোদী’। প্রধানমন্ত্রী যদি এ ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা না করেন, তা হলে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে প্রশ্ন তুলবে কংগ্রেস।