ন্যাশনাল হেরাল্ড নিয়ে রণংদেহি কংগ্রেস-বিজেপি

সংসদ চলতে দেবে না কংগ্রেস— এটা বুঝতে পেরে আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়াল বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা বুঝতে পারছেন, বাদল অধিবেশনের মতো শীত অধিবেশনও বানচাল করে দিতে চায় কংগ্রেস। তখন ছিল ললিত কাণ্ড। আর এখন ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে বলে শাসক দলকে চাপে ফেলতে চাইছে কংগ্রেস। তাই বিষয়টি নিয়ে এ বার পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রের শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব স‌ংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:১৫
Share:

সংসদ চলতে দেবে না কংগ্রেস— এটা বুঝতে পেরে আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়াল বিজেপি।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা বুঝতে পারছেন, বাদল অধিবেশনের মতো শীত অধিবেশনও বানচাল করে দিতে চায় কংগ্রেস। তখন ছিল ললিত কাণ্ড। আর এখন ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে বলে শাসক দলকে চাপে ফেলতে চাইছে কংগ্রেস। তাই বিষয়টি নিয়ে এ বার পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রের শাসক দল। সেই উদ্দেশ্যেই এ দিন বিজেপির সদর দফতরে ঘটা করে ন্যাশনাল হেরাল্ড নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হয়। যার নাম ‘ফ্যামিলি গ্রিড অ্যান্ড ন্যাশনাল ব্ল্যাকমেল।’ বিজেপির অভিযোগ, ন্যাশনাল হেরাল্ড প্রশ্নে নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে সংসদ বন্ধক রাখছে গাঁধী পরিবার। দু’দিন আগে একটি সংবাদপত্রের অনুষ্ঠানে সনিয়া-রাহুলের নাম না করে খোঁচা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘জিএসটি পরের কথা। মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে জড়িত বিলগুলিও কারও কারও খামখেয়ালিপনার জন্য আটকে যাচ্ছে।’’

ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয় কংগ্রেসও। সোমবার থেকে তারা সংসদে তুমুল হট্টগোল করার পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে। তবে কংগ্রেস নেতৃত্ব এটাও বুঝতে পারছেন যে, ন্যাশনাল হেরাল্ড প্রশ্নে সরব হলে উল্টে ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ শত হলেও বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়া। তা ছাড়া এই মামলায় সনিয়া-রাহুল-সহ ছ’জন কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। কংগ্রেস নেতারা তাই বুঝতে পারছেন এ নিয়ে বেশি সরব হলে বিজেপিও মাঠে-ময়দানে প্রচার চালাবে সনিয়া-রাহুলের ব্যক্তিগত ফায়দার জন্যই সংসদ অচল করে রেখেছে কংগ্রেস। তবে কপিল সিব্বলের মতো আইনজীবী কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, ‘‘স্বার্থের সংঘাত বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়। কারণ যে দু’টি মূল সংস্থা ঘিরে অভিযোগ, সে দু’টিই কংগ্রেস পরিচালিত। রাহুল ও সনিয়ার নামে যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক নয়।’’ কংগ্রেসের বক্তব্য, সংসদের বাইরে যদি বিজেপি এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়, সে ক্ষেত্রে আইনের এই যুক্তি তুলে ধরবে দল। তাই আগামী সপ্তাহে দলের রণকৌশল কী হবে, তা ঠিক করতে আগামী কাল সনিয়ার নেতৃত্বে বৈঠকে বসতে চলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, ললিত কাণ্ড, বসুন্ধরার দুর্নীতির মতো বিষয়গুলি নিয়ে সোমবার থেকে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কংগ্রেসের। তোলা হবে ব্যপম দুর্নীতির প্রসঙ্গও।

Advertisement

তারই মধ্যে জিএসটি বিলটি পাশ করানোর জন্য শেষ চেষ্টায় নামছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সোমবার বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছেন তিনি। কিন্তু সেই বৈঠক যে ফলপ্রসূই হবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত কংগ্রেস। সংসদে শেষ দু’সপ্তাহে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে কংগ্রেস শিবিরও যে তৈরি হচ্ছে, তা-ও অজানা নয় বিজেপির কাছে। পরিস্থিতি যা তাতে বিজেপি শিবির বুঝতে পারছে জিএসটি বিল পাশ করানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন