জমি বিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক ডেকে এখন চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেননা, তাঁর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠক ভেস্তে দিতে এ বার সক্রিয় হয়েছেন সনিয়া গাঁধী।
দিল্লিতে ১৫ তারিখের নীতি আয়োগের বৈঠকে দেশের কত জন মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত হাজির থাকবেন, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ২১ জুলাই থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন বসছে। তার আগে মোদীকে চাপে ফেলতে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করার পরিকল্পনা করছেন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরা। এই মুহূর্তে অসম, কেরল, হিমাচল, কর্নাটক সহ দেশের ন’টি রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ইতিমধ্যেই জমি বিলে এনডিএ সরকারের আনা সংশোধনীগুলির বিরোধিতা করে সংসদের যৌথ কমিটিকে চিঠি লিখেছেন। শুধু কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরাই নন, অ-বিজেপি অন্য মুখ্যমন্ত্রীরাও জমি বিল নিয়ে তাঁদের আপত্তি জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমি বিলে আপত্তির কথা চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছেন। নীতি আয়োগের বৈঠকে হাজির থাকবেন না তিনি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদব, দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবাল, ত্রিপুরার মানিক সরকারের আপত্তি রয়েছে জমি অধিগ্রহণে মোদী সরকারের প্রস্তাবগুলি নিয়ে। এখন এই অসন্তোষকেই ব্যবহার করতে চান সনিয়া।
তবে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরা শেষপর্যন্ত বয়কটের প্রস্তাবে কী রকম সাড়া দেন, সেটা দেখার। প্রধানমন্ত্রী মোদী কালই দেশে ফিরছেন। নীতি আয়োগের বৈঠক বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা যাতে বয়কট না করেন, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে পারেন তিনি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল রবিবার একটি ইফতারের আয়োজন করেছিলেন। তিনিও নীতি আয়োগের বৈঠকে না যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে বিরোধী শিবিরে এখন তৎপরতা চলছে। তবে নীতীশ কুমার, অখিলেশ যাদব, মানিক সরকারের মতো মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে উপস্থিত থেকে তাঁদের বক্তব্য জানাবেন নাকি বয়কটের পথে হাঁটবেন, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। পরিষ্কার নয় তামিলনাডুতে সদ্য গদি ফিরে পাওয়া জয়ললিতার অবস্থানও।
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী ঐক্য জোরালো করতে সোমবার ইফতারের আয়োজন করেছেন সনিয়া গাঁধী। সেখানে এ সব বিষয়ে আলোচনা করে রণনীতি স্থির করবেন তিনি। বাদল অধিবেশনের আগে নীতি আয়োগের বৈঠকে মোদীকে ধাক্কা দিতে চেষ্টা করবেন বিরোধীরা। তবে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সেই ঐক্যে কতটা চিড় ধরাতে পারবেন সেটাও দেখার। যেমন এ দিন পণ্য ও পরিষেবা বিলে সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে ও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের। তাঁদের নিয়ে তুমুল বিতর্কের পরে এই প্রথম বার মোদীর মুখোমুখি হবেন বিজেপির এই দুই মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁদের সঙ্গে আলাদা ভাবে মোদীর বৈঠকের সম্ভাবনা কম।