মীরা অস্ত্রে যুদ্ধ বিজেপির সঙ্গে

অঙ্কের হিসেবে রাষ্ট্রপতি ভোটে বিরোধী জোটের প্রার্থীর জেতার আশা নেই এখনও পর্যন্ত। তবু মীরা কুমার এ দিন সংসদে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর পরেই সাংবাদিকদের সনিয়া বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এটা মতাদর্শ, নীতি ও সত্যের লড়াই। এবং আমরা লড়ে যাব।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ০৩:৫০
Share:

মীরা কুমার। ছবি: পিটিআই।

রাষ্ট্রপতি ভোট নিমিত্ত মাত্র। আসলে যে তিনি নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপির সঙ্গে মতাদর্শের যুদ্ধ লড়ছেন, তা জানিয়ে দিলেন সনিয়া গাঁধী। রাষ্ট্রপতি ভোটকে ‘মতাদর্শ, নীতি ও সত্যের লড়াই’ আখ্যা দিয়ে সনিয়া আজ সব বিরোধীকে এক সুতোয় গাঁথার কাজটিও শুরু করেছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটই তাঁর পাখির চোখ।

Advertisement

অঙ্কের হিসেবে রাষ্ট্রপতি ভোটে বিরোধী জোটের প্রার্থীর জেতার আশা নেই এখনও পর্যন্ত। তবু মীরা কুমার এ দিন সংসদে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর পরেই সাংবাদিকদের সনিয়া বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এটা মতাদর্শ, নীতি ও সত্যের লড়াই। এবং আমরা লড়ে যাব।’’

মীরার মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে তাঁর পাশে সনিয়া, মনমোহন সিংহ থেকে শুরু করে শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, মায়াবতীর দলের সতীশ মিশ্র, সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব, ডিএমকে-র কানিমোঝির মতো ১৭টি বিরোধী দলের নেতারা হাজির ছিলেন। অমরেন্দ্র সিংহ, ভি নারায়াণস্বামী, সিদ্দারামাইয়া, মুকুল সাংমার মতো কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরাও দিল্লিতে চলে এসেছিলেন। রাহুল গাঁধী দিল্লিতে নেই। তিনি টুইট করেছেন, ‘‘বিভাজনের মতাদর্শের বিরুদ্ধে মীরা কুমার এমন এক মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করেন, যা আমাদের এক জাতি হিসেবে বেঁধে রাখে।’’

Advertisement

মনোনয়ন জমার পরে সংসদে নিজের ঘরে সকলকে নিয়ে যান সনিয়া। মীরার স্বামী-পুত্রও ছিলেন সেখানে। চা-পানের ফাঁকে দীর্ঘক্ষণ চলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা। সেখানেও সনিয়া অন্যান্য দলের নেতাদের বলেন, এটা যে শুধু রাষ্ট্রপতি ভোট নয়, সকলকে তা বোঝাতে হবে। সনিয়ার যে বিষয়টি বিরোধী নেতাদের বেশি করে নজর কেড়েছে তা হলো, নিজের দলের সঙ্গে অন্যান্য দলের নেতাদেরও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। বাম থেকে তৃণমূল, সব দলের নেতাদেরই সম্মান জানিয়েছেন। প্রত্যেককে দাঁড়িয়ে থেকে স্বাগত জানিয়েছেন।

ইয়েচুরি বলেন, ‘‘কেউ কেউ এটাকে দলিত বনাম দলিতের লড়াই বলছেন। এটা দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার লড়াই। প্রতিপক্ষের প্রাথীকে যে সব দল সমর্থন করছে, তারা গণতন্ত্রের ভিতটাই ধ্বংস করে দিতে চায়। দলবল মিলে সংখ্যালঘু, দলিতদের খুন করার মতো ঘটনাও সরকারি সমর্থন পাচ্ছে। শাসক দলের শীর্ষ নেতারা মুখ বুজে থেকে তাতেই মদত দিচ্ছেন।’’

সংসদে যাওয়ার আগে মীরা আজ সকালে রাজঘাটে ও সমতা স্থলে গাঁধী ও তাঁর বাবা বাবু জগজীবন রামের স্মৃতিস্থলে যান। ৩০ জুন সকালে আমদাবাদের সাবরমতী গাঁধী আশ্রম থেকে তিনি গোটা দেশে প্রচার শুরু করবেন। ঘটনাচক্রে, সে দিন মোদীও থাকবেন আমদাবাদে। প্রচারে কলকাতাতেও যাবেন মীরা। আজ অবশ্য প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতো কংগ্রেসের নেতারা মীরাকে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ-বিধায়কদের প্রায় সব ভোটই মীরার পক্ষে। কারণ, কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল— সব ভোটই মীরার ঝুলিতে যাবে। ইয়েচুরি জানান, মীরা চেন্নাই গেলে গোপালকৃষ্ণ গাঁধী তাঁকে সমর্থন জানাতে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন