অধিবেশন আজ থেকে

নিজে বাড়বে না ধরবে হাত, ধন্দ কংগ্রেসে

আজ দলের ‘বিষয় কমিটি’র বৈঠকে রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন রাহুল ও সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৮
Share:

মা-ছেলে: কংগ্রেস স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

দু’দশক আগে পাঁচমঢ়ী অধিবেশনে অন্য দলের হাত ধরার বাস্তবতার কথা মেনে নিয়েছিল কংগ্রেস। কাল থেকে শুরু হচ্ছে কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ (প্লেনারি) অধিবেশন। কোনও দলের সঙ্গে হাত মেলানোর বিষয়টি চলতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কতটা এবং কী ভাবে বলা হবে, সেই পথ খোঁজা হবে সেখানে। কারণ, নিজের দলের শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি অন্য দলকে সঙ্গে নেওয়ার কাজটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কংগ্রেসের কাছে। ভারসাম্যের এই খেলায় এখন মুন্সিয়ানার সঙ্গে এগোতে হবে দলের নতুন সভাপতি রাহুল গাঁধীকে।

Advertisement

তার আগে আজ দলের ‘বিষয় কমিটি’র বৈঠকে রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন রাহুল ও সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহেরা। ছিলেন দলের অন্য নেতারাও। কংগ্রেস সূত্রের মতে, রাজনৈতিক প্রস্তাবের যে খসড়া তৈরি হয়েছে, তাতে স্পষ্ট ভাবে এখনও পর্যন্ত জোট বাঁধার কথা বলা হয়নি। আবার কোনও আঞ্চলিক দলের বিরুদ্ধেও কথা বলা হয়নি। শুধু সূক্ষ্ম বার্তা দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কাল প্লেনারি অধিবেশনে এ নিয়ে মতামত শোনা হবে। রাহুল শুরু করবেন অধিবেশন। বলবেন সনিয়াও।

কিন্তু কেন এখনও স্পষ্ট ভাবে জোটের কথা বলছে না কংগ্রেস?

Advertisement

দলের এক নেতার কথায়, আসলে চন্দ্রবাবু নায়ডু এনডিএ ছাড়ার আগেই তৃণমূল, বিজেডি-সহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সম্প্রতি এম কে স্ট্যালিন, কে চন্দ্রশেখর রাও, উদ্ধব ঠাকরের মতো নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভোট আসতে আসতে শরদ পওয়ারও কোন দিকে ঝুঁকবেন, এখনও তা স্পষ্ট নয়। তিনি আবার বিরোধীদের নিয়ে আলাদা বৈঠক করছেন। যাঁকে সঙ্গে রাখতে রাহুলও তাঁর বাড়ি যাচ্ছেন।

ফলে আগামী দিনে মোদী-বিরোধী জোটের চেহারাটি কী দাঁড়ায়, সেটি দেখে নিয়েই অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ, সনিয়া চান, লোকসভা ভোটের আগে রাহুলের নেতৃত্বেই বিজেপি-বিরোধী জোট তৈরি হোক। তার আগে রাহুলও চান রাজ্যে রাজ্যে নিজেদের শক্তিও বাড়িয়ে নিতে।

সেই কারণে রাহুল আজ বৈঠকের ফাঁকেও নরেন্দ্র মোদীকে নানা বিষয়ে তুলোধোনা করেছেন। বেশি দাম দিয়ে রাফাল বিমান কেনা নিয়ে বিঁধেছেন। আবার ‘পরামর্শে’র ছলে মোদীকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘ভারত আসলে আপনার বিরুদ্ধেই জেগে উঠছে।’’ দলের বৈঠকের আগে দিল্লিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে বলে এসেছেন, ব্যপমের মতো কেলেঙ্কারি হতে দেবেন না। এর পাশাপাশি জোট-বার্তা দিতে লালুপ্রসাদের উপরে সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়েও সরব হয়েছেন।

এ দিনের বৈঠকে রাহুলের মূল জোর ছিল দলের সংগঠনকে আরও মজবুত করা। তাই রাজ্যে রাজ্যে ও এআইসিসি-তে বিশিষ্ট জনদের নেওয়ার সংখ্যাটিও ১৫ শতাং‌শ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। নতুনদের আরও সুযোগ দিতে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত যুবক ধরা কিংবা সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনার কথা বলেছেন। যে ওয়ার্কিং কমিটিতে এক ঝাঁক প্রবীণের বদলে আরও নতুন মুখ আনতে চান রাহুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন