Congress

জুন পর্যন্ত রাশ সনিয়ার হাতেই

এই সিদ্ধান্তের আগে গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মার মতো কংগ্রেসের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা বৈঠকে দাবি তুলেছিলেন, এখনই সাংগঠনিক নির্বাচন হোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫২
Share:

—ফাইল চিত্র

কংগ্রেসের মধ্যে ফাটল ফের ফুটে উঠল। কংগ্রেসের সভাপতি ও সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে সনিয়া গাঁধীর সামনেই বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালেন দলের নেতারা। প্রত্যাশা মতোই কংগ্রেসের সভাপতি পদের নির্বাচন আরও এক বার পিছিয়ে গিয়েছে। ঠিক হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ-কেরল-তামিলনাড়ু-অসম ও পুদুচেরিতে বিধানসভা নির্বাচনের পরে, জুনের শেষে তা হবে। তত দিন সনিয়াই অন্তর্বর্তী সভানেত্রী থাকবেন।

Advertisement

এই সিদ্ধান্তের আগে গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মার মতো কংগ্রেসের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা বৈঠকে দাবি তুলেছিলেন, এখনই সাংগঠনিক নির্বাচন হোক। শুধু সভাপতি পদে নয়। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি ও নির্বাচনী কমিটির পদেও নির্বাচন হোক। পি চিদম্বরম, মুকুল ওয়াসনিকের মতো নেতারাও তাঁদের সমর্থন জানান। অশোক গহলৌত, অম্বিকা সোনিরা তাঁদের পাল্টা আক্রমণ করেন। বাগ্‌বিতণ্ডায় রাশ টানতে মাঠে নামতে হয় খোদ রাহুল গাঁধীকে। রাহুলই বচসা থামাতে বলেন, এই সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে কলহ যা করার রয়েছে, একবারে করে শেষ করা হোক।

গুলাম নবি, আনন্দ শর্মার মতো ২৩ জন নেতা গত অগস্টেই সনিয়াকে চিঠি লিখে সাংগঠনিক নির্বাচন চেয়েছিলেন। তার পরেই ঠিক হয়েছিল, যত দ্রুত সম্ভব সভাপতি পদে নির্বাচন হবে। আজ ভিডিয়ো কনফারেন্সে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে তাঁরা ফের সেই দাবি তোলায় গহলৌত তাঁদের পাল্টা আক্রমণ করেন। বিজেপির তুলনা টেনে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত বলেন, বিজেপি বিহার ভোটের পরেই বাংলার ভোটের প্রস্তুতিতে নেমেছে। সেখানে কংগ্রেসের কিছু নেতা সাংগঠনিক নির্বাচনের মতো ‘অপ্রাসঙ্গিক বিষয়’ নিয়ে সময় নষ্ট করছেন। গুলাম নবি, আনন্দ শর্মারা যে ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্বাচিত হয়ে আসেননি, মনোনীত হয়ে এসেছেন, তা-ও মনে করিয়ে গহলৌত খোঁচা দেন।

Advertisement

গাঁধী পরিবারের আর এক বিশ্বস্ত নেত্রী অম্বিকা সোনি গুলামকে মনে করিয়ে দেন, ২০১৭-তে রাহুল সভাপতি হওয়ার পরে গুলামই তাঁকে ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের অধিকার ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। গহলৌত বলেন, এখনও এই বিষয়টি সভাপতির উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ, তারিক আনোয়ার, কেরলের উমেন চান্ডি, এ কে অ্যান্টনির মতো প্রবীণ নেতারাও বিক্ষুব্ধদের সমালোচনা করেন। সনিয়ার উপরে গুলামদের আস্থা রয়েছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন গহলৌত। পাল্টা জবাবে আনন্দ শর্মা বলেন, তাঁরা দলের ভালর জন্যই সরব হয়েছেন। কিন্তু এমন ভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরা হচ্ছে, যেন তাঁরা সভানেত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন। কিছু নেতা নিয়মিত প্রবীণ নেতাদের অসম্মান করছেন। বিক্ষুব্ধ নেতাদের মূল ক্ষোভ ছিল রাহুলের বিরুদ্ধে। যুক্তি ছিল, রাহুল সভাপতি না-হলেও পিছন থেকে দলকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। অধিকাংশ প্রবীণ নেতার সঙ্গে কোনও রকম আলোচনাই করছেন না।

বৈঠকে রাহুল বলেন, সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে বচসা শেষ করে, কৃষক আন্দোলনে কী ভাবে চাষিদের পাশে দাঁড়ানো যায়, প্রতিষেধক বণ্টনে খামতি, বালাকোট অভিযানের তথ্য আগাম ফাঁস নিয়ে দলের রণকৌশল নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হোক। ওয়ার্কিং কমিটিতে এই তিনটি বিষয়ে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বালাকোট অভিযানের তথ্য ফাঁস নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির দাবি তোলা হবে। সনিয়া শুরুতেই মোদী সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এআইসিসি-র সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, “দলীয় নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি মে মাসের শেষে নির্বাচনের দিনক্ষণ স্থির করেছিল। সর্বসম্মতিতে তা এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জুন মাসের মধ্যেই কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নির্বাচন হয়ে যাবেন।” ওয়ার্কিং কমিটির বচসার কথা তিনি মানতে চাননি। আবার ওয়ার্কিং কমিটির পদে নির্বাচন হবে কি না, তা-ও খোলসা করতে চাননি। তাঁর যুক্তি, সাধারণত সভাপতিই ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে থাকেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন