শশী তারুর। — ফাইল চিত্র।
বীর সাভারকর পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরকে। কিন্তু ওই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। শশী জানান, ঠিক কী কারণে তাঁকে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে বা কোন সংস্থার তরফে এই উদ্যোগ— কোনওটাই তাঁর কাছে পরিষ্কার নয়। যার ফলে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডলে একটি বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই পুরস্কারকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। যে কারণে এই সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছেন শশী।
এনজিও হাই রেঞ্জ রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এইচআরডিএসচ)-র তরফে বুধবার দিল্লির এনডিএমসি কনভেনশন হলে ‘বীর সাভারকর ইন্টারন্যাশনাল ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে পুরস্কারের জন্য শশীকে মনোনীত করা হয়। কিন্তু তিনি সেখানে পুরস্কার নিতে যাননি। শশী সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে করে জানান, সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারেন যে তাঁকে বুধবার বীর সাভারকর পুরস্কার দেওয়া হবে। পাশাপাশি এ-ও জানান, তিনি ওই পুরস্কার নিতে যাচ্ছেন না। কারণও উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, “এই সম্মান আমায় কেন দেওয়া হচ্ছে তা আমি জানি না। কোন সংস্থার এই উদ্যোগ তা-ও আমার কাছে পরিষ্কার নয়। তাই অনুষ্ঠানে গিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।”
তিরুঅনন্তপুরমে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শশী বলেন, “আমি এই পুরস্কার সম্পর্কে কিছু জানতাম না। তা-ই গ্রহণও করিনি। আমাকে আগে থেকে না-জানিয়ে ও সম্মতি না-নিয়ে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছিল, যা আয়োজকদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কাজ বলেই আমি মনে করি।” তাঁর সংযোজন, “পরিষ্কার করে বলার পরেও অনেকেই একই প্রশ্ন আমায় জিজ্ঞাসা করে যাচ্ছেন। তা-ই বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য আমি এই বিবৃতি দিচ্ছি।”
এই প্রসঙ্গে কেরলের কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কে মুরলীধরণ বলেন, “বিজেপি এবং দক্ষিণপন্থীরা বিনায়ক দামোদর ‘বীর’ সাভারকরকে একজন বিপ্লবী হিসাবে বিবেচনা করে। কিন্তু কংগ্রেস স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসেছে বার বার। এই পুরস্কার শশী গ্রহণ করলে, তা কংগ্রেসের জন্য অপমানজনক এবং অস্বস্তিকর হত।”
প্রসঙ্গত, রাজারহাটের সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডি লিট দেওয়া হবে শশীকে। ওই অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে ২০২৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। বছর ৭০-এর শশী ২০০৯ সাল থেকেই কংগ্রেসের সাংসদ। লন্ডনে জন্ম হলেও তাঁর বেড়ে ওঠা মুম্বইয়ে। কলকাতার সঙ্গেও নিবিড় যোগ। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত শশী পড়াশোনা করেছেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলে। এখনও তাঁর সাহিত্য প্রতিভার ছোঁয়াও মাঝে মধ্যে এসে লাগে কলকাতায়। আদতে কেরলের বাসিন্দা শশী ২০০৯ সালেই প্রথমবার নির্বাচনে যোগ দেন। কংগ্রেসের টিকিটে তিনি জয়ী হন তিরুঅনন্তপুরমের আসন থেকে। এ বার তাঁকেই বিশেষ সম্মানে ভূষিত করতে চলেছে সেন্ট জ়েভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। আগামি ফেব্রুয়ারিতে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।