রাহুল গাঁধীর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে ডিজিটাল দুনিয়ায় আম জনতার টাকা কতটা নিরাপদ?
কাল রাহুল গাঁধীর আর আজ কংগ্রেস দলেরই টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার পরে এই প্রশ্ন তুলে বিজেপি-নিন্দায় সরব হল কংগ্রেস। কিন্তু সংসদে এই নিয়ে হল্লা করতে দিলেন না খোদ রাহুলই। দলের নেতাদের বললেন, এটি এমন একটা বড় বিষয় নয় যে, তা নিয়ে সংসদে হাঙ্গামা করতে হবে। এই বিষয় নিয়ে শোরগোল করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে নোট বাতিলে মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি-ই।
সংসদে প্রসঙ্গটি না-তুললেও বিজেপি-আরএসএসকে সমালোচনা করতে অবশ্য ছাড়েননি কংগ্রেস নেতারা। কাল রাতে রাহুলের এবং আজ সকালে কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সমানে কুরুচিকর মন্তব্য পোস্ট হতে থাকে। খুব দ্রুত সেগুলো রি-টুইটও করা হয়। মোদী সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়ছেন, কাল রাতে খবর পেয়েই মন্ত্রকের অফিসাররা টুইটারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রাহুলের অ্যাকাউন্ট থেকে বিতর্কিত টুইট মুছে ফেলা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস। তাদের তদন্তে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট কোন কোন জায়গা থেকে খোলা হয়েছে, তার বিবরণ চেয়েছেন রাহুল। সেটিও তাঁকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
এই সব আশ্বাসে অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। রাহুল আজ টুইট করে বলেন, ‘‘যাঁরা ঘৃণা করেন, তাঁদের সকলকেই তিনি ভালবাসেন।’’ কিন্তু কংগ্রেস নেতারা সকাল থেকেই কড়া সুরে বলতে থাকেন, এই হ্যাকিংয়ের ঘটনা প্রমাণ করে দিল যে, সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমজনতাকে ডিজিটালের দিকে ঠেলা হচ্ছে। কিন্তু সেই ডিজিটাল লেনদেন কি আদৌ নিরাপদ? সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তো যে কোনও সময় টাকা মেরে দেওয়া যেতে পারে!
কংগ্রেসের এই অভিযোগের উত্তরে রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘সাইবার অপরাধ রুখতে এই সরকার অনেক পদক্ষেপ করেছে। মানুষের টাকা যথেষ্ট সুরক্ষিত।’’ মন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কংগ্রেসের জমানাতে এ ধরনের হ্যাকিং কি ঘটেনি?’’ বিজেপির দাবি, রাহুল বা কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং কোনও বিজেপি বা আরএসএস সমর্থকের কাজ নয়। সন্দেহের তির কংগ্রেসেরই এক প্রাক্তন কর্মীর দিকে। যা শুনে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের অন্দরে কেউ এমন কাজ করবে না। পোস্টগুলো মোদী-ভক্তরাই রি-টুইট করেছেন।’’ ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতাদের বলছেন। যদি তদন্তে এমন কিছু বেরিয়ে আসে, তা হলে বুঝতে হবে, এর পিছনেও রয়েছে বিজেপির হাত। কারণ, যে কুরুচিকর ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, আর মিনিটখানেকের মধ্যে যে ভাবে সেগুলো রি-টুইট করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট, রাহুল ও কংগ্রেসকে বদনাম করতেই এই কাজ করা হয়েছে।