নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
মাসের শেষে জন্মদিন। বছর ঘুরলেই ভোট।
ভুল করেও ‘সুদিন’ আনার স্লোগান আর মুখ থেকে বেরোয় না। অসমাপ্ত কাজ দেখিয়েই চার বছরের জন্মদিন ধুমধাম করে পালনের তোড়জোড় করছেন নরেন্দ্র মোদী। নতুন স্লোগান ভাবা হচ্ছে- ‘রাস্তা ঠিক, লক্ষ্য বাকি’। কিন্তু এই স্লোগান তুললে কংগ্রেস ফের চেপে ধরবে। তাই বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করতে জন্মদিনের মূল থিম রাখা হচ্ছে, ‘৪৮ বছর বনাম ৪৮ মাস’। ২৬ মে মোদী সরকারের চার বছর পূর্ণ হচ্ছে। তখন মন্ত্রক ধরে ধরে বিজ্ঞাপন হবে। প্রচার হবে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এক সপ্তাহ আগে থেকেই গোটা দেশে আসরে নেমে পড়বেন মন্ত্রী-নেতারা। রাজ্যে রাজ্যে যাবেন। সভা করবেন। সাংবাদিকদের বলবেন গ্রাম-গরিবের জন্য কত কাজ করেছে মোদী সরকার। আক্রমণাত্মক প্রচারে মেলে ধরবেন, কংগ্রেসের ৪৮ বছর আর মোদীর ৪৮ মাসের কাহিনি। কংগ্রেস ‘উন্নয়ন-বিরোধী’ আর ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’। আর মোদী দিয়েছেন দুর্নীতিমুক্ত উন্নয়ন।
এ জন্য চার মন্ত্রীর একটি কমিটি তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে রয়েছেন নিতিন গডকড়ী, স্মৃতি ইরানি, পীযূষ গয়াল ও ধর্মেন্দ্র প্রধান। এই কমিটির কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। সব মন্ত্রক থেকে কাজের খতিয়ান তুলে ধরে স্থির হচ্ছে, জন্মদিন কী ভাবে পালন করা যায়। কিন্তু সূত্র বলছে, সরকারের সাফল্যে এমন প্রকল্পকেও সামিল করা হচ্ছে যে কাজ এখনও পূর্ণই হয়নি।
যেমন বুলেট ট্রেন। জমি জটে এখনও আটকে রয়েছে প্রকল্প। কিন্তু সরকারের ‘দ্রুত গতি, দ্রুত উন্নয়ন আর দ্রুত প্রযুক্তি’র নজির মেলে ধরতে বুলেট ট্রেনকেও ‘সাফল্য’ হিসেবে রাখা হচ্ছে। সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যপূরণ হয়নি, ঘরে ঘরেও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি- কিন্তু সেগুলিও ঠাঁই পাচ্ছে সরকারি সাফল্যের তালিকায়। যদিও বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘কংগ্রেস এতটাই গভীর গর্ত খুঁড়ে রেখেছিল, যে সে গর্ত বোজাতেই অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। যে কাজ হয়নি অথচ করা হবে, সেটিও বলা হবে। সে কারণেই বলা হবে, রাস্তা সঠিক পথেই আছে, শুধু লক্ষ্যপূরণ বাকি।’’
অনেক কাজ বাকি আছে বলে খোদ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সচিবদের ধমক দিয়েছেন। বলেছেন, সব সময়ে তাঁর হস্তক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। বকেয়া কাজে সচিবেরা নিজেদের উদ্যোগেই ছাড়পত্র দিন। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই নরেন্দ্র মোদী শুধু একের পর এক মিথ্যে কথা বলে মানুষকে বোকা বানিয়েছেন। মানুষ এখন চিনে ফেলেছেন মোদীকে। চার বছরের আগেই সরকার স্বীকার করে নিচ্ছে, ভোট-প্রতিশ্রুতি পালন সম্ভব হচ্ছে না। এরপর আর কেন জনতা তাঁকে ভোট দেবেন?