সংখ্যালঘু ভোট খোয়ানোর আশঙ্কায় কংগ্রেস তাদেরই এক সময়ের শরিক মজলিস-ই-ইত্তিহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশের অভিযোগ তুলল। হায়দরাবাদের এই আঞ্চলিক সংখ্যালঘু দলটি মহারাষ্ট্রে ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ২টিতে জিতেছে এ বার। ১৫টিতে দ্বিতীয় স্থান। এর পরেই দলটির নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি ঘোষণা করেন, তাঁরা দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের ভোটেও প্রার্থী দেবেন। এটাই চিন্তায় ফেলেছে কংগ্রেসকে।
দিগ্বিজয় সিংহ অভিযোগ তুলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আঁতাঁত রয়েছে ওয়াইসি-র। বিজেপির সঙ্গে তালমিল করেই ওঁরা প্রার্থী দিচ্ছেন। বিজেপি সংখ্যাগুরুর মেরুকরণ ঘটাচ্ছে, আর ওয়াইসিকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু ভোটেরও মেরুকরণের চেষ্টা হচ্ছে।” মহারাষ্ট্রে আস্থা ভোটে এমআইএম গরহাজির থেকে বিজেপির সুবিধে করে দেওয়াতেও আঁতাঁতের সন্দেহটা আরও জোরালো হয়েছে কংগ্রেসের।
এটা যে কংগ্রেসের রাজনৈতিক সম্ভাবনার পথে বড় বিপদ হয়ে উঠেছে সেটা প্রকাশ্যে না বললেও ঘরোয়া আলোচনায় সেই আশঙ্কাটাই উঠে আসছে। কংগ্রেসের নেতাদের প্রশ্ন, যে দল সাবেক অন্ধ্রপ্রদেশে কিংবা হালে তেলঙ্গানার ভোটেও সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি, তারাই হায়দরাবাদের বাইরে ভোটে লড়ার জোর পাচ্ছে কোথা থেকে? টাকা জোগাচ্ছে কারা?
কংগ্রেসের এক নেতার এমনও অভিযোগ, মুসলিম লিগের থেকেও কট্টরপন্থী দল এটি। আসাদুদ্দিনের ভাই আকবরউদ্দিন জনসভায় কট্টর বক্তৃতা দিয়ে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। ওঁদের লক্ষ্য হল, কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির ভোটে ভাগ বসানো। কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি এতে বিপাকে পড়বে। সুবিধা হবে বিজেপির। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্য এ-ও বলেন, “মুশকিল হল মুলায়ম সিংহ যাদব বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে স্তরে নেমে সংখ্যালঘু রাজনীতি করেন, কংগ্রেসের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। কারণ, জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেসকে ভারসাম্য রাখতে হয়। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্য সংখ্যালঘু নেতাও নেই তেমন। বিজেপি-এমআইএম আঁতাঁতে সব চেয়ে বিপদ তাই কংগ্রেসেরই।
আসাদুদ্দিনপাল্টা বলেছেন, “ভোটে হেরে মতিভ্রম হয়েছে কংগ্রেসের। মোদীর সঙ্গে এমআইএম-এর দুঃস্বপ্নেও সমঝোতা হবে না।” আর বিজেপির মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেনের বক্তব্য, “জাতীয় স্তরে যাঁরা মেরুকরণের রাজনীতি করেছেন, সেই কংগ্রেস, মুলায়মরা ভয় পাচ্ছেন। একটাই রুটি, কত ভাগ হবে!”