Congress

ভোটেও কি ইজ়রায়েলের ‘টিম’, তদন্ত চায় কংগ্রেস

ভারত-সহ প্রায় তিরিশটি দেশের নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলের সংস্থা টিম হোর্হের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৪
Share:

কংগ্রেসের অভিযোগের তির এ বারও নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে। প্রতীকী ছবি।

পেগাসাসের পরে ‘টিম হোর্হে’। প্রথমে বিরোধী নেতাদের মোবাইলে আড়ি পাতার অভিযোগ। আর এ বার ভোটের আগে ভুয়ো প্রচারে জনমত প্রভাবিত করার অভিযোগ। দুই প্রাযুক্তিক কারিকুরির উৎস সেই একই— ইজ়রায়েল। আর তা কাজে লাগানো নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগের তির এ বারও নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে।

Advertisement

ভারত-সহ প্রায় তিরিশটি দেশের নির্বাচন প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলের সংস্থা টিম হোর্হের বিরুদ্ধে। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাংবাদিকদের একটি যৌথ দল ওই সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে গত আট মাস ধরে তদন্ত চালিয়েছে। নিহত সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের কাজে অনুপ্রাণিত হয়েই নাকি এই অনুসন্ধানে ঝাঁপায় সাংবাদিকদের যৌথ দলটি। ছদ্মবেশী সেই সাংবাদিকদের তদন্তভিত্তিক রিপোর্ট একটি ব্রিটিশ সংবাবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে অভিযোগ তোলা হয়েছে, গত দু’দশক ধরে অন্তত তিরিশটি দেশে নির্বাচনের আগে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো প্রচার চালিয়ে জনমতকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছে ইজরায়েলি সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই কংগ্রেসের দাবি, মোদী সরকার গত লোকসভা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে টিম হোর্হের সাহায্য নিয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট করুক। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।

বিদেশি সাংবাদিকদের তদন্তমূলক প্রতিবেদনটি বলছে, তাল হানান নামে ইজ়রায়েলের স্পেশাল ফোর্সের এক প্রাক্তন সদস্য ওই সংস্থাটি গঠন করেন। তাঁদের কাজ মূলত একটি উন্নত সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে টুইটার, ফেসবুক, টেলিগ্রাম, জিমেল, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করে কোনও নির্দিষ্ট দল বা সংস্থার হয়ে জোরদার প্রচার চালানো। নজরদারির মাধ্যমে গোপন তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রচারের কাজে ব্যবহার করা। অবশ্যই অর্থের বিনিময়ে।

Advertisement

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ছাড়াও ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, জার্মানি, সুইৎজ়ারল্যান্ডের পাশাপাশি আফ্রিকার বেশ কিছু দেশেও কাজ করেছে টিম হোর্হে। ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের হানান জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা বেসরকারি সংস্থা তাঁদের ‘গ্রাহক’। তাঁদের কাজ, জনমত ওই গ্রাহকের বিরুদ্ধে থাকলে সমাজমাধ্যমে ধারাবাহিক ভুয়ো ও মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে তা পাল্টানো। হানানের দাবি, এ যাবৎ বিশ্বে ৩৩টি প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের নির্বাচনে তাঁরা কাজ করেছেন। ২৭টিতে সফলও হয়েছেন।

বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কংগ্রেসের দাবি, টুইটারের প্রধানমন্ত্রী মোদীর ৬০ শতাংশেরও বেশি ফলোয়ার ভুয়ো। প্রায় ১৮ হাজার টুইটার অ্যাকাউন্ট বিজেপির হয়ে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। আজ কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘ওই ইজরায়েলি সংস্থা যে ভাবে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে জনমত পাল্টানোর কথা মেনেছে, তার সঙ্গে বিজেপির আইটি শাখার কর্মপদ্ধতির ভীষণ মিল রয়েছে। তাই তদন্ত হোক। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যেখানে ইজ়রায়েলের পেগাসাস সফ্টওয়্যার ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, তাই গত লোকসভা নির্বাচনে জনমতকে প্রভাবিত করতে টিম হোর্হের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট করুক সরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন