অমিতের পর এ বার অজিত ডোভালের ছেলেকে নিয়ে প্যাঁচে বিজেপি

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের পুত্র শৌর্য দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩১
Share:

অজিত ডোভালের ছেলে শৌর্য ডোভাল।

অমিত শাহের ছেলের পরে এ বার অজিত ডোভালের ছেলেকে নিয়ে বিপাকে বিজেপি। আর নয়া অস্ত্র পেয়ে উজ্জীবিত কংগ্রেস।

Advertisement

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের পুত্র শৌর্য দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও চালান। অভিযোগ উঠেছে, সংস্থাটি এক দিকে বিদেশি অনুদান নেয়। অন্য দিকে তাদের আয়োজিত সভায় আমেরিকা, ইজরায়েলের এমন সব সংস্থা টাকা ঢালে, যাদের লেনদেন এ দেশের প্রতিরক্ষা, বিমান, বাণিজ্য বা বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে।

শৌর্যর সংস্থার ডিরেক্টর পদে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব ছাড়াও রয়েছেন মোদী সরকারের চার মন্ত্রী। এঁরা হলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হা এবং বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর।

Advertisement

আরও পড়ুন: ২০২২-এর স্বপ্ন ফেরি নীতি আয়োগেরও

জেমিনি নামের যে আর্থিক পরিষেবা সংস্থা শৌর্য চালান, সেটিও ভারতে বিদেশি লগ্নিতে সাহায্য করে। বছরে কমবেশি ১০০ কোটি ডলার ব্যবসা করা ওই সংস্থায় শৌর্যর শরিক এক সৌদি রাজকুমার। এই সৌদি-যোগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই খবরকে হাতিয়ার করে আজ কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, ‘এটি ‘স্বার্থের সংঘাত’। কারণ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন দেশের নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য নীতির মতো বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা সভার আয়োজন করে। তাতে বোয়িং-এর মতো যে সব মার্কিন সংস্থা এবং মাগালের মতো ইজরায়েলি সংস্থা টাকা ঢালে, তাদের লেনদেন ওই চার মন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে। অভিযোগ, এই সূত্রেই ওই সব দফতর থেকে বরাত পাওয়ার চেষ্টা করে তারা।

কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের প্রশ্ন, ‘‘কোনও মন্ত্রী কি সংস্থার ডিরেক্টর হতে পারেন? এ তো বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনও ভাঙা হচ্ছে। কারণ সেই আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে, কোনও রাজনৈতিক দল বা তার পদাধিকারী বিদেশি অনুদান নিতে পারবেন না।’’

স্বাভাবিক ভাবেই একে হাতিয়ার করে মোদীকে বিঁধেছেন রাহুল গাঁধী। টুইটারে তাঁর কটাক্ষ, ‘শাহ-জাদার অসামান্য সাফল্যের পরে বিজেপির নতুন নিবেদন—অজিত শৌর্য গাথা!’ কংগ্রেসের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবিলম্বে এই চার মন্ত্রীকে বরখাস্ত করুন। তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু হোক। সিব্বলের প্রশ্ন, ‘‘কবে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তাঁর ‘মন কি বাত’ জনতাকে বলবেন?’’ প্রয়োজনে কংগ্রেস আদালতের দ্বারস্থ হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন সিব্বল।

বিজেপি সভাপতি তথা প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘনিষ্ঠতম সেনাপতি অমিত শাহর ছেলে জয় শাহের ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠার অভিযোগ উঠেছে কিছু দিন আগেই। মোদীর বিশ্বস্ত অজিত ডোভালের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরে হিমাচল-গুজরাতের ভোটে নতুন অস্ত্র পেয়ে রীতিমতো চাঙ্গা কংগ্রেস। হিমাচলে কংগ্রেসের বীরভদ্র সিংহ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মাঠে নেমেছে বিজেপি।

এই অবস্থায় আজ বীরভদ্র বলেন, ‘‘আলমারি থেকে আর কত কঙ্কাল বের হবে?’’ এই ঘটনার পরে মোদীর ভাবমূর্তি এবং দুর্নীতি দমনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সরব হয়েছে আপ-আরডেজি-সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলিও।

বিজেপি অবশ্য পুরো বিষয়টি নিয়ে মুখ বন্ধ রাখারই কৌশল নিয়েছে। অমিত শাহের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা তাঁর হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। কেন্দ্রের সরকারি আইনজীবীকে শাহ-পুত্রের হয়ে আইনি লড়াইয়ের অনুমতিও দেওয়া হয়। অজিত ডোভালের ছেলের ক্ষেত্রে সে পথে হাঁটেনি মোদী সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন