আমাদেরও ডাক চাই, দাবি উঠল রাজ্যে রাজ্যে   

গোয়া বিধানসভার বিরোধী দলনেতা চন্দ্রকান্ত কাবলেকর আজ দলের বিধায়কদের নিয়ে রাজ্যপাল মৃদুলা সিন্হার সঙ্গে দেখা করেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০৪:১০
Share:

রায়বরেলীর বিধায়ক অদিতি সিংহ।

কর্নাটকে গরিষ্ঠতাহীন একক বৃহত্তম দলের নেতাকে সরকার গড়তে ডাকায় রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস ও অন্য দলগুলি সরকার গড়ার দাবি জানাতে শুরু করেছে নতুন করে। ‘অতীতের ‘ভুল সংশোধনের’ দাবি উঠেছে গোয়া, বিহার ও মণিপুরে। একই পথে হাঁটছে মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের বিরোধী শিবিরও। কর্নাটক প্রসঙ্গে বুধবার গভীর রাতের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাজ্যপালকে তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে আদালত বাধা দেবে না। তবে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত প্রশ্নাতীত নয়। কংগ্রেস, আরজেডি-সহ বিরোধী দলগুলি আদালতের এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই নতুন এক রাজনৈতিক লড়াই শুরু করেছে। রাজ্যে তো বটেই রাজধানীতেও পথে নেমে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস।

Advertisement

গোয়া বিধানসভার বিরোধী দলনেতা চন্দ্রকান্ত কাবলেকর আজ দলের বিধায়কদের নিয়ে রাজ্যপাল মৃদুলা সিন্হার সঙ্গে দেখা করেন। বেরিয়ে এসে জানান, রাজ্যপালের কাছে লিখিত অনুরোধ রেখেছি, যাতে তিনি ‘বিজেপিকে ডাকার ভুল সংশোধন করে’ এ বার কংগ্রেসকে সরকার গড়তে ডাকেন। রাজ্যপাল দু’দিনের মধ্যে চিঠির জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের। ২০১৭-র ভোটে ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৬টি আসন ও বিজেপি ১৩টি। দু’টি আঞ্চলিক দল ও নির্দলদের নিয়ে জোট করে সরকার গড়ার ডাক পায় বিজেপি।

বিহারের বিরোধী দলনেতা, আরজেডির তেজস্বী যাদবও এ দিন পটনায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানান। রাজভবনে ১১১ জন বিধায়কের সমর্থনের চিঠি রাজ্যপালকে দেন। সঙ্গে যান কংগ্রেসের কোকব কাদরি, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চার দানিশ রিজওয়ান। সরকার গড়তে দরকার অন্তত ১২২ জনের সমর্থন। তেজস্বীর দাবি, ‘‘ভোটের আগের বৃহত্তম জোট এবং ভোটের পরে বৃহত্তম দল হিসেবে আমাদের সরকার গড়তে ডাকা উচিত। বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা দিতে আমরা রাজি। বেশ কয়েক জন জেডিইউ এবং বিজেপি বিধায়ক আমাদের সঙ্গে আসবেন।’’ বিধানসভার ২৪৩টি আসনের মধ্যে আরজেডির শক্তি ৮০, জেডিইউ ৭০, বিজেপি ৫৩ ও কংগ্রেস ২৭। একটি আসন শূন্য। বাকিগুলি অন্যান্য দল ও নির্দলদের দখলে। বিজেপির মঙ্গল পাণ্ডের কটাক্ষ, ‘‘তেজস্বী কর্মহীন। খালি মগজ শয়তানের ঘর।’’ জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমার খোলা চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘গণতন্ত্রে বালখিল্যতা (বাবুয়াগিরি) কাজে লাগে না।’’

Advertisement

মণিপুরের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল জগদীশ মুখীর সঙ্গে দেখা করে একই দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। গত ভোটে ৬০ আসনের বিধানসভায় ২৮টিতে জিতে কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল হয়। কিন্তু সরকার গড়ার ডাক পায়নি। ২১টি আসন পাওয়া বিজেপি দলে টানে এনপিএফ, এনপিপি, তৃণমূল, নির্দল ও লোক জনশক্তি পার্টির বিধায়ককেও। একটি আসন কম পড়লে কংগ্রেস বিধায়ক শ্যামকুমারকে শিবিরে এনে মন্ত্রী করে দেয় দল ছাড়ার আগেই। এর পরে তাদেরই সরকার গড়তে ডাকেন তৎকালীন রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা। পরে কংগ্রেসের আরও ৮ বিধায়ক পদত্যাগ না করেই বিজেপিতে যোগ দেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, দলত্যাগ বিরোধী আইন ও সংবিধানের দশম তফসিলকে বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে মণিপুরে।

মেঘালয়ে গত ভোটে মোট ৬০টি আসনের মধ্যে ২১টি আসন পেয়ে একক বৃহত্তম দল হয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু ২টি আসন পাওয়া বিজেপি আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েছে। আমপাতি কেন্দ্রে উপনির্বাচন মিটলেই কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবে।

ক্ষোভ নাগাল্যান্ডেও। বিরোধী নেতা এনপিএফের টি আর জেলিয়াং বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পরে ২৬টি আসন পেয়ে একক বৃহত্তম দল হয়েছিলাম। আমাদের সরকার গড়তে দেওয়া হয়নি। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গড়ার দাবি জানাব।’’

রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অতীতেও। ইউপিএ জমানায় কেরলে রমেশ ভাণ্ডারী ও কর্নাটকেই হংসরাজ ভরদ্বাজের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল্লির পথে সরব হয়েছিল বিজেপি। এখন পাশা উল্টে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন