চাকরি কই? প্রচার চায় কংগ্রেস

ভোটের মুখে আমজনতার মন আবার এই প্রশ্নে ফেরাতে কোমর বেঁধে মাঠে নামল কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

কাজ কই?

Advertisement

ভোটের মুখে আমজনতার মন আবার এই প্রশ্নে ফেরাতে কোমর বেঁধে মাঠে নামল কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনের আগে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ-যুদ্ধ তরজা আর তাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উন্মাদনা থেকে প্রচারের আলো ঘুরিয়ে আবার তা চাকরির অভাব, বেকারির মতো সমস্যার দিকে ঘোরাতে এখন মরিয়া তারা। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের টুইট, ‘‘চাকরি। চাকরি। এবং চাকরি। আগামী ভোটে এই তিনটিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’

সম্প্রতি কলকাতায় সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট রাকেশ ভারতী মিত্তল বলেন, এখন যে বিষয়গুলি মাথাব্যথার বড় কারণ, তার অন্যতম হল চাকরি। তাঁর কথায়, প্রতি বছর কাজের বাজারে পা রাখছেন ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি নতুন মুখ। কিন্তু সেই তুলনায় বেসরকারি লগ্নি প্রায় নেই। চাহিদাও তলানিতে।

Advertisement

এই অবস্থায় কাজের সুযোগ যথেষ্ট সংখ্যায় তৈরি না হওয়া সত্যিই চিন্তার কারণ।

মিত্তলের এই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করেছেন চিদম্বরম। তাঁর দাবি, বণিকসভাটির তরফ থেকে ওই বয়ানের পরে কাজের সুযোগ তৈরি নিয়ে কেন্দ্রের মিথ্যে আরও স্পষ্ট হবে। বিরোধীরা বলছেন, সরকার অস্বীকার করলেও কাজের বাজারের বেহাল দশার কথা এখন কবুল করছে শিল্পমহল। এ দিন এ নিয়ে মোদী সরকারকে ফের নিশানা করেছেন চিদম্বরম। কিন্তু মিত্তলের বক্তব্যের পরে এক বিবৃতিতে সিআইআই দাবি করেছে, তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, গত চার বছরে দেশে ছোট-মাঝারি শিল্পে নিট কাজের সুযোগ বেড়েছে ১৩.৯ শতাংশ। আর সিআইআইয়ের এই বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে বলছেন, রাজরোষে পড়ার ভয়ে এমনিতেই এ দেশে সরকারের বিরুদ্ধে চট করে মুখ খোলে না শিল্পমহল। বর্তমান সরকারের জমানায় এই প্রবণতা আরও বেশি। তাঁদের প্রশ্ন, তবে কি চাকরি নিয়ে চিন্তার কথা বলার পরে চাপে পড়েই ছোট-মাঝারি শিল্পে কর্মসংস্থানের কথা বলতে হল বণিকসভাটিকে?

বিরোধীদের অভিযোগ, কাজের বাজারের বেহাল দশা লুকোতে গিয়ে তিনটি ‘অন্যায়’ করছে কেন্দ্র।

প্রথমত, ২০১৭-১৮ সালে কাজের বাজারের অবস্থা নিয়ে এনএসএসও-র সমীক্ষায় জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশন সিলমোহর দেওয়ার পরেও তা প্রকাশ করা হয়নি। সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, নোটবন্দির পরে দেশে বেকারত্বের হার ছিল সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ (৬.১ শতাংশ)। চাকরির বিবর্ণ ছবি ফুটে উঠেছে সিএমআইই-র সমীক্ষাতেও। তা অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৭.২ শতাংশে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের পরে সব থেকে বেশি। কিন্তু সরকার নীরব।

দ্বিতীয়ত, চাকরি নিয়ে কোনও প্রামাণ্য তথ্য না দিয়ে বার বার বিভিন্ন আনুমানিক যুক্তি পেশ করছে সরকার। যেমন বলা হচ্ছে, দ্রুততম বৃদ্ধির দেশে চাকরি হচ্ছে না, তা আবার হয় না কি!

তৃতীয়ত, প্রথমে পুলওয়ামা এবং তার পরে বালাকোট কাণ্ডের পরে বেকারত্বের মতো বিষয়গুলি প্রচারে পিছনের সারিতে চলে যাওয়ার ভরপুর ফায়দা তুলছে কেন্দ্র। চাইছে, প্রচারের আলো থাকুক জাতীয়বাদের স্লোগান আর যুদ্ধের জিগিরেই।

রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই কারণেই বেকারত্বের সমস্যাকে ফের প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে ফেরানোর এই আগ্রহ। এ বার ভোটে কংগ্রেসের ইস্তেহার তৈরির মূল কারিগর চিদম্বরমের এই মন্তব্যও সম্ভবত সেই কারণে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement