‘আইএনএস অরিহন্ত’-এর সাফল্য ব্যাখ্যায় নরেন্দ্র মোদী। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। টুইটার
ফাঁপরে কংগ্রেস।
নোটবন্দি ব্যর্থ হলে চার রাস্তার মোড়ে এসে শাস্তি মাথা পেতে নেওয়ার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু কোন চৌরাস্তায়, তা বলেননি! তাই নোট বাতিলের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে কাল দেশের সব চৌরাস্তায় এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে ধর্নায় বসার নির্দেশ দিলেন দলীয় সভাপতি রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস যত সরব হচ্ছে, তত মুখ লুকোচ্ছে বিজেপি। গত বার তারা তা-ও বড় মুখ করে ‘কালো টাকা বিরোধী দিবস’ পালন করেছিল। বড় বড় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। এ বছর কোনও বিজ্ঞাপন নেই, কোনও অভিযান নেই। আছেন শুধু অরুণ জেটলি। ‘যিনি নোট বাতিলের আগে ঘুণাক্ষরেও কিছু জানতেন না,’ কটাক্ষ কংগ্রেস নেতাদের।
রাহুল আজ টুইটে করেছেন, ‘‘নোট বাতিল ভেবেচিন্তে করা ষড়যন্ত্র। এই দুর্নীতি প্রধানমন্ত্রীর সুট-বুট বন্ধুদের কালো টাকা সাদা করার প্রকল্প। এই কাণ্ডে কিছুই নির্দোষ নয়। এর অন্য কোনও অর্থ বের করা মানে দেশের বোধশক্তির অপমান।’’
এখানেই থামেননি কংগ্রেস সভাপতি। একটি দীর্ঘ বিবৃতিও জারি করেছেন। তার পরতে পরতে খুলতে চেয়েছেন নরেন্দ্র মোদীর মুখোশ। রাহুল বলেছেন, ‘‘সরকার যতই লুকোনোর চেষ্টা করুক, নোটবন্দি শুধু ভুল পরিকল্পনা ও দুর্বল রূপায়ণই নয়, এই আর্থিক কেলেঙ্কারির পুরো সত্য এখনও আসেনি। ভারত খুঁজে বার করবে। তত ক্ষণ বিশ্রাম নেই।’’
বিজেপি বুঝতে পারছে, নোট বাতিলের সময় তৈরি হওয়া আমজনতার রোষকে ভোটে হাতিয়ার করতে চাইছেন রাহুল। সে কারণেই নোটবন্দির সময় মানুষের হাহাকারের ছবি নিয়ে ভিডিয়ো প্রচার করছে। আজই মুক্তি পাওয়া অমিতাভ বচ্চন, আমির খানের ছবি ‘ঠগস অব হিন্দুস্তান’ নিয়ে কংগ্রেস পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করছে। বিজেপির এক নেতা বললেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর পথ খোঁজা হচ্ছে।’’
কিন্তু ভুলতে দিচ্ছেন না রাহুল। তাঁর সাফ কথা, ‘‘১২০ জনের বেশি মারা গিয়েছেন। ছোট-মাঝারি, অসংগঠিত ক্ষেত্র শেষ হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতি, কালো টাকা, জাল নোট আর সন্ত্রাসবাদ বন্ধ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর একটিও প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। উল্টে সব চেয়ে গরিবদের উপর আত্মঘাতী হামলা হয়েছে। এ সব আমাদের ভুললে চলবে না।’’
এরই মধ্যে আজ সন্ধ্যেয় হঠাৎ খবর এল, মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর রাত আটটায় তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে। দিল্লিতে আতঙ্ক ছড়াল, ফের নোটবন্দি? দু’বছর আগে নভেম্বরের আট তারিখ রাত আটটায় এমনই আচমকা আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন মোদী। কিন্তু এ বার মোদী নন, মন্ত্রিসভার নানাবিধ সিদ্ধান্ত জানাতে এলেন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। হাঁফ ছাড়লেন সবাই!