NPA

মনমোহন সিংহের সঙ্গে পরামর্শ করুন, ঋণ ‘মকুব’ নিয়ে রাহুলকে কটাক্ষ সীতারামনের

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেসের ঐতিহ্য মেনেই বিষয়টিকে প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে গিয়ে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করেছেন।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১৫:০০
Share:

ঋণ ‘মকুব’ নিয়ে রাহুল গাঁধীকে পাল্টা কটাক্ষ নির্মলা সীতারামনের। —ফাইল চিত্র

ইচ্ছাকৃত ঋণ না মেটানো ৫০ ঋণখেলাপির তালিকা নিয়ে বাগযুদ্ধে নামলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার রাহুল গাঁধী তোপ দেগেছিলেন, বিজেপি তথা শাসক দলের ‘বন্ধু’দের ঋণ মকুব করা হয়েছে বলেই সংসদে তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেননি নির্মলা সীতারামন। বুধবার তার জবাবে এক গুচ্ছ টুইট করে ঋণ মকুবের দায় ঠেললেন ইউপিএ জমানার উপরেই। রাহুল গাঁধীর বক্তব্য বিভ্রান্তিকর ও উস্কানিমূলক বলেও মন্তব্য করেছেন নির্মলা। রাহুলকে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এ বিষয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে পরামর্শ করুন রাহুল।’’

Advertisement

সম্প্রতি ৫০টি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি সংস্থার ৬৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা ঋণ মকুবের তালিকা প্রকাশ্যে এসেছে। তথ্য জানার অধিকার আইনে ওই তথ্য দিয়েছে আরবিআই। সেই তালিকায় রয়েছে বিজয় মাল্য, মেহুল চোক্সীদের সংস্থার নামও। সেই তালিকা সামনে আসতেই মঙ্গলবার কেন্দ্র তথা বিজেপিকে তোপ দাগেন রাহুল গাঁধী। তাঁর বক্তব্য ছিল, সংসদে তিনি এই নিয়ে প্রশ্ন করলেও অর্থমন্ত্রী তার উত্তর দেননি। টুইটারে রাহুল আরও লিখেছিলেন, যাঁদের ঋণ মকুব করা হয়েছে, তাঁদের অনেকেই বিজেপি তথা সরকারের ‘বন্ধু’। প্রায় একই সুরে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও।

বুধবার পর পর অনেকগুলি টুইট করে এক দিকে রাহুলকে জবাব ও পাল্টা আক্রমণ এবং ঋণ মকুবের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। অনেকটা পিছনের দিকে হেঁটে ইউপিএ জমানার তথ্য তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘‘রাহুল গাঁধী এবং রণদীপ সুরজেওয়ালা জঘন্য ভাবে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। কংগ্রেসের ঐতিহ্য মেনেই বিষয়টিকে প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে গিয়ে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করেছেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দোকানপাট খোলা নিয়ে আজই নতুন নির্দেশিকা দিতে পারে নবান্ন

অর্থমন্ত্রীর দাবি, এই ঋণ মকুব করা হয়নি। বরং নন পারফর্মিং অ্যাসেট বা অনুৎপাদক সম্পদের হিসেব কষার জন্যই ওই সব সংস্থাগুলির ঋণ অনাদায়ী খাতে দেখানো হয়েছিল। সেই ঋণ এখনও উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তিনি লিখেছেন, যাঁদের সামর্থ্য বা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঋণের টাকা ফেরাননি, অর্থ তছরুপ করে বিদেশে বা অন্যত্র পাচার করেছেন, অথবা ব্যাঙ্কের অনুমতি ছাড়া সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছেন— এমন সংস্থাগুলিকে স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তাঁদের অধিকাংশই ইউপিএ জমানায় অনেক সুবিধা পেয়েছিলেন।’’

আরও পড়ুন: অভিনেতা ইরফান খান প্রয়াত, বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর

অর্থমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশেই এই অনুৎপাদক সম্পদের খতিয়ান তৈরি করেছিল ব্যাঙ্কগুলি। তৎকালীন আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজনের সেই সময়ের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি লিখেছেন, ‘‘রঘুরাম রাজন বলেছিলেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অনাদায়ী ঋণ তৈরি হয়েছে। এই সময়ের এমন সংস্থাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যাদের আগেও ঋণখেলাপের ইতিহাস রয়েছে। তা সত্ত্বেও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি তাদের ঋণ দিয়ে গিয়েছে।’’

এর পর নীরব মোদী, মেহুল চোক্সী, বিজয় মাল্যদের ঋণ খেলাপের বিষয়ে আলাদা আলাদা করে উল্লেখ করে নির্মলা সীতারামন বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী সরকারই বরং এই সব অনাদায়ী ঋণ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি লিখেছেন, ‘‘এ পর্যন্ত ৯৯৬৭টি মামলা হয়েছে, ৩৫১৫টি এফআইআর হয়েছে। নীরব মোদী, মেহুল চোক্সী ও বিজয় মাল্যদের কাছ থেকে মোট ১৮ হাজার ৩৩২.৭ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, যাকে ঋণ মকুব বলা হচ্ছে, সেটা আসলে মকুব নয়। শুধুমাত্র অনুৎপাদক সম্পদ খাতে দেখানো হয়েছিল। সেই ঋণের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা এখনও চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন