NCERT

গান্ধী: কাটছাঁট পাঠ্যপুস্তকে, সাফাই দিচ্ছে পরিষদ

পাঠ্যবই ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কের শুরু এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বই নিয়ে। ওই বই থেকে মোগল যুগের ইতিহাস বাদ পড়েছে বলে হইচই শুরু হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৯
Share:

একাদশ শ্রেণির সমাজবিদ্যার বই থেকে বাদ পড়েছে গুজরাত দাঙ্গার উল্লেখ। প্রতীকী ছবি।

এনসিইআরটি-র পাঠ্যপুস্তক ঘিরে বিতর্কের জল আরও গড়াল। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে বাদ গিয়েছে গান্ধী-হত্যা সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য। একাদশ শ্রেণির সমাজবিদ্যার বই থেকে বাদ পড়েছে গুজরাত দাঙ্গার উল্লেখ। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞানের কোনও বইতেই এখন আর ওই ঘটনার উল্লেখ নেই। এনসিইআরটি-র তরফ থেকে যদিও ফের দাবি করা হয়েছে, এই পরিবর্তন কোনওটাই নতুন নয়। কিন্তু গত বছর সিলেবাস পরিবর্তনের বিজ্ঞপ্তিতে যে যে পরিবর্তনের তালিকা দেওয়া হয়েছিল, সেই তালিকায় এগুলো নেই। এনসিইআরটি (রাষ্ট্রীয় শিক্ষা অনুসন্ধান এবং প্রশিক্ষণ পরিষদ) এখন বলছে, চোখ এড়িয়ে গিয়েই তালিকায় বিভ্রান্তি। তারা দ্রুত পরিমার্জিত তালিকা পেশ করবে।

Advertisement

গান্ধী হত্যা প্রসঙ্গে কী বাদ পড়েছে বইয়ে? গান্ধীকে যে হিন্দু মৌলবাদীরা পছন্দ করত না, তারা যে একাধিক বার গান্ধীকে হত্যার চেষ্টা করেছে, গান্ধী-হত্যার পরে যে আরএসএস কিছুদিনের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, নাথুরাম গডসে যে পুণের ব্রাহ্মণ এবং একটি কট্টরপন্থী হিন্দু পত্রিকার সম্পাদক— এই সব তথ্য পুরনো বইয়ে ছিল। এখন আর নেই।

তেমনই গত বছর প্রকাশিত তালিকায় দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই থেকেই গুজরাত দাঙ্গার দু’টি উল্লেখ বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের দাবি, এ বছর প্রকাশিত বই ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, একাদশ শ্রেণির সমাজবিদ্যার বই থেকেও ওই প্রসঙ্গ বাদ পড়েছে, যা তালিকায় ছিল না। এবং এই ‘নতুন’ পরিবর্তনের ফলে যা দাঁড়াল, তাতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ কোনও শ্রেণির বইতেই গুজরাত দাঙ্গার কোনও উল্লেখ থাকল না।

Advertisement

পাঠ্যবই ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কের শুরু এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বই নিয়ে। ওই বই থেকে মোগল যুগের ইতিহাস বাদ পড়েছে বলে হইচই শুরু হয়। এনসিইআরটি-র ডিরেক্টর দীনেশ সাকলানি তার উত্তরে দাবি করেছিলেন, এগুলো নতুন পরিবর্তন নয়। অতিমারিতে পড়াশোনার ক্ষতি এবং পড়ুয়াদের উপরে চাপের কথা মাথায় রেখে সিলেবাসে কিছু কাটছাঁট করা হয়েছে গত বছরই। সেটাই বজায় আছে। রাতারাতি নতুন কোনও বদল হয়নি। তাঁর আরও দাবি ছিল, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। বিশেষজ্ঞ কমিটি নিরপেক্ষ ভাবেই পুনরাবৃত্তি আর অপ্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডে বিচার করে যা বাদ দেওয়ার, বাদ দিয়েছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে আজ নতুন করে বিতর্ক আরও ঘোরালো হয়েছে। গান্ধীহত্যার খুঁটিনাটি এবং গুজরাত প্রসঙ্গ বাদ পড়ার নিরিখে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’-এর অভিযোগ ফের প্রাণ পেয়েছে। সেই সঙ্গে এই ‘বাদ’ পড়া অংশের কথা যে গত বছর জুনে পরিবর্তিত সিলেবাসের তালিকায় ছিল না, তা-ও সামনে এসেছে। সাকলানি আজ বলছেন, চোখ এড়িয়ে গিয়েই ওগুলো তালিকায় ওঠেনি। অর্থাৎ তাঁর এখনও বক্তব্য, পরিবর্তন নতুন নয়। গলদ ছিল পরিবর্তনের তালিকাতেই।

এনসিইআরটি-র দাবি, গোটা বিষয়টাকে নিয়ে তিলকে তাল করা হচ্ছে। বাম নেতৃত্ব, শিবসেনা, ডিএমকে-র মতো দল গোড়া থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল। আজ রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল টুইটে কটাক্ষ করেছেন, আধুনিক ভারতের ইতিহাস ২০১৪ থেকে শুরু করলেই হয়! লক্ষণীয় হল, কংগ্রেস এখনও তেমন ভাবে মুখ খোলেনি। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সামনে কর্নাটক ভোট। তার আগে এ নিয়ে সুর চড়ালে ভোটে মেরুকরণ বাড়বে বলে আশঙ্কা কংগ্রেসের। তাই তারা খানিকটা চুপচাপই থাকছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন