ধৃত রমেশ সিংহ।
লোকদেখানো পেশা ছিল ইসলামাবাদে কর্মরত ভারতীয় কূটনীতিকের বাড়িতে রান্না করা। কিন্তু এখন জানা গিয়েছে, তিনি পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর চর হিসেবে কাজ করতেন! রমেশ সিংহ কন্যাল নামে ওই ব্যক্তিকে গত কাল পিথোরাগড়ের ডিডিঘাটে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশের সন্ত্রাস দমন শাখা(এটিএস)।
লখনউ ও পিথোরাগড়ের এটিএস অফিসাররা জানিয়েছেন, ২০১৫-২০১৭ সালের মধ্যে ইসলামাবাদে এক ভারতীয় কূটনীতিকের বাড়িতে রাঁধুনির কাজ করতেন রমেশ। তাঁর ভাই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। ভাইয়ের সূত্রেই কূটনীতিকের বাড়িতে রান্নার কাজ পান রমেশ। উত্তরপ্রদেশ এটিএসের এক অফিসারের দাবি, জাতীয়তাবাদ বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন রমেশ। বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে লখনউয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইসলামাবাদে থাকাকালীন অর্থের বিনিময়ে আইএসআই-কে গোপন তথ্য সরবরাহ করার অভিযোগ আনা হয়েছে রমেশের বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের কোনও সেনাঘাঁটি সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করতে বলা হয়েছিল রমেশকে। তাঁর বাড়িতে তল্লাশির সময়ে পাকিস্তানের ‘কিউ মোবাইল’ ফোন (স্মার্ট ফোন) উদ্ধার করেছেন অফিসাররা। তাঁদের বক্তব্য, যোগাযোগ করার জন্য আইএসআই-ই রমেশকে ওই মোবাইল দিয়েছিল। সেটি আপাতত ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাতে স্পাইওয়্যার থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসলামাবাদে থাকার সময়ে ভারতীয় দূতাবাসের সাফাই কর্মীদের মাধ্যমে আইএসআইয়ের সংস্পর্শে আসেন রমেশ। দেনায় ডুবে থাকা রমেশকে ডলারের লোভ দেখিয়ে চর হিসেবে কাজে নিয়োগ করে পাক গুপ্তচর সংস্থা। তবে রমেশ শুধু অর্থলোভেই এই কাজ করতেন না অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভারতীয় কূটনীতিকের বাড়িতে তাঁর ল্যাপটপ, ফোন সব কিছুতেই আড়ি পাতা হয়েছিল বলে দাবি।
এটিএস অফিসাররা জানাচ্ছেন, ভারতে ছুটি কাটাতে এসে রমেশ আইএসআই মারফত পাওয়া ডলার দিল্লি থেকে ভারতীয় টাকায় বদলে নিতেন। তা নিয়ে চলে যেতেন নিজের গ্রামে। জেরায় জানা গিয়েছে, ভারতে ফিরে আসার পরেও আইএসআই অফিসাররা তাঁকে চরের কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। তাই মোবাইলটি সঙ্গে দিয়ে দেওয়া হয়। এখন ট্রানজিট রিমান্ডে থাকা রমেশকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা হবে। কী কী তথ্য তিনি ফাঁস করেছেন, তার বিনিময়ে তাঁকে কত ডলার দেওয়া হয়েছে, সবই জানার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: ছাঁট মাফিয়ারাই খুনের পিছনে, নিশ্চিত পুলিশ
এ মাসের গোড়াতেই সেনাবাহিনী সূত্রে খবর পেয়ে চরবৃত্তির অভিযোগে উত্তরপ্রদেশ এটিএস ফৈজাবাদের আফতাবকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করে আইএসআই-এর আরও কিছু চরের খোঁজ পেয়েছে এটিএস।