Coronavirus in India

দিল্লিতে এক দিনে মৃত্যু ১১১ জনের, দেশে দৈনিক সুস্থতার চেয়ে বাড়ল সংক্রমিত

অতিমারিতে এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ২২৭ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ১১:১৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সরকারি নির্দেশে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে দেশ জুড়ে। আক্রান্তদের শনাক্তকরণ নিয়ে বেড়েছে তৎপরতাও। তবে করোনার প্রকোপ ঠেকানো যাচ্ছে না কিছুতেই। বরং প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছেন। বেশ কয়েক দিন পর ফের দৈনিক সংক্রমণ ছাপিয়ে গিয়েছে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাকেও। আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও, কোভিডের প্রকোপে মৃত্যুও অব্যাহত।

Advertisement

রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে পরিসংখ্যান সামনে এনেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৫ হাজার ২০৯ জন। তাতে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯০ লক্ষ ৯৫ হাজার ৬ হয়েছে। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৪ হাজার ৯৬২।

অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশে করোনার প্রকোপে দৈনিক মৃত্যু হাজারের নীচেই রয়েছে যদিও। তবে সংখ্যার ওঠাপড়া চলছেই। ১৫ নভেম্বর থেকে পর পর বেশ কয়েক দিন দৈনিক মৃত্যু ৪০০-র ঘরে ঘোরাফেরা করলেও, ১৯ নভেম্বর থেকে ফের তা ৫০০-র উপরে চলে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫০১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অতিমারিতে এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ২২৭ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

একই ভাবে দৈনিক সংক্রমণ এবং সুস্থতার ভারসাম্যেও ওঠাপড়া চলছেই। দৈনিক সংক্রমণের তুলনায় এ দিন ফের দৈনিক সুস্থতা নীচে নেমে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ হাজার ৪৯৩ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৪৯ হাজার ৭১৫। দেশে মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ ২১ হাজার ৬১৭ জন করোনা রোগী সেরে উঠেছেন। এই মুহূর্তে দেশে সুস্থতার হার ৯৩.৬৯ শতাংশ।

প্রতি দিন যত সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তারে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ লক্ষ ৭৫ হাজার ৩২৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার ৪.২ শতাংশ।

সংক্রমণ এবং মৃত্যুর নিরিখে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতিই সবচেয়ে ভয়াবহ। তবে দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুতে এ দিন মহারাষ্ট্রকে ছাপিয়ে গিয়েছে রাজধানী দিল্লি। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৫ হাজার ৮৭৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ১১৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ১০৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

আরও পড়ুন: ট্রপিক্যালেও করোনার টিকা পরীক্ষার জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন

দিল্লির মতো কেরলেও দৈনিক সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এ দিন নতুন করে ৫ হাজার ৭৭২ জন সংক্রমিত হয়েছেন সেখানে। প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন রোগী। মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৭৬০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার প্রকোপে এ দিন সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৬২ জন। এ ছাড়াও কর্নাটক (২০), অন্ধ্রপ্রদেশ (৭), তামিলনাড়ু (১৮), উত্তরপ্রদেশ (২৪), পশ্চিমবঙ্গ (৫৩), ওডিশা (১৭), তেলঙ্গানা (৪), রাজস্থান (১৬), বিহার (৪), ছত্তীসগঢ় (২২), হরিয়ানা (২৫), অসম (২), গুজরাত (৯), মধ্যপ্রদেশ (১১), পঞ্জাব (২৩), ঝাড়খণ্ড (৬), জম্মু ও কাশ্মীর (২), উত্তরাখণ্ড (৮), গোয়া (৩), হিমাচলপ্রদেশ (১৮), মনিপুর (১), চণ্ডীগঢ় (৩), মেঘালয় (২), নাগাল্যান্ড (১), লাদাখ (২) এবং সিকিমেও (২) করোনা রোগীর প্রাণ গিয়েছে।

গোটা বিশ্বে এই মুহূর্তে আমেরিকাতেই অতিমারির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩৮৬ জন মানুষ কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯৯০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার প্রকোপে আমেরিকায় সবমিলিয়ে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বতালিকায় আমেরিকার পরেই রয়েছে ভারত। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৮৬। এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯৮৯ জন কোভিড আক্রান্তের প্রাণ গিয়েছে সেখানে। এই মুহূর্তে ব্রাজিলে দৈনিক সংক্রমণ ৩০ হাজারের কোটায় ঘোরাফেরা করছে।

আরও পড়ুন: নন-সাবার্বান ট্রেন চালুর রূপরেখা আগামী সপ্তাহে​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন