National News

করোনাকে রুখতে ৯ দফা পরামর্শ দিলেন অভিজিৎ-এস্থার

নোবেল জয়ী দম্পতির মতে, ২১ দিনের লকডাউনের ফলে ভারতে করোনা-সংক্রমণের হারকে বশে রাখা গেলেও এর চৌহদ্দিতে রাশ টানাটা বেশ কঠিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ২০:৪১
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় জনমানসে সচেতনতা ছাড়াও মজবুত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার পরামর্শ দিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার দুফলো। লকডাউনের সময় কী কী করণীয়, তা নিয়েও ন’পয়েন্টের পরামর্শ দিয়েছেন নোবেলজয়ী এই দম্পতি।

Advertisement

এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে করোনা নিয়ে সচেতনতার প্রচারে যুক্ত অভিজিৎ এবং এস্থার। এরই ফাঁকে কর্নাটকে এ বিষয়ক একটি চটজলদি সমীক্ষাও সেরে ফেলেছেন তাঁরা। ওই দুই কাজ থেকে যে বিষয়গুলি তাঁদের নজরে এসেছে তার পর অভিজিৎ এবং অস্থারের মত, নোভেল করোনাভাইরাসের নিয়ে ওয়াকিবহাল হলেও বেশির ভাগ মানুষ এখনও জানেন না, এটি এড়াতে কোন কোন বিষয়ে লক্ষ রাখা উচিত।

নোবেল জয়ী দম্পতির মতে, ২১ দিনের লকডাউনের ফলে ভারতে করোনা-সংক্রমণের হারকে বশে রাখা গেলেও এর চৌহদ্দিতে রাশ টানাটা বেশ কঠিন। কারণ, নতুন করে বহু মানুষের মধ্যে একে ছড়িয়ে দিতে পারেন এই ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি। পাশাপাশি, এই ভাইরাস বহনকারীদের চিহ্নিত করাটাও বেশ কঠিন কাজ। উদাহরণ হিসাবে অভিজিৎ বলেন, “ধরুন, দিল্লি থেকে যে ছেলেটি তাঁর বাড়িতে ফিরেছে, কোনও কিছু বোঝার আগেই তাঁর সংস্পর্শে আসা পরিজনদের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে যেতে পারে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: লকডাউন নিশ্চিত করতে সীমানা সিল করুন, রাজ্যগুলিকে নির্দেশ কেন্দ্রের

আরও পড়ুন: আটকে আছি, প্লিজ কিছু করুন, আর্তি আসছে দেশের নানা প্রান্ত থেকে​

অন্য দিকে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার কোনও বাসিন্দা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তা রোখা মুশকিল হতে পারে। পাশাপাশি, এক বার ২১ দিনের লকডাউনের বিধিনিষেধ উঠে গেলে করোনা-আক্রান্তের হার বৃদ্ধিরও সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন তাঁরা। তা ছাড়া, এই ২১ দিনের মধ্যেই সংক্রমণে পুরোপুরি নিয়ন্ৎরণ আনা যাবে, এমনটাও মনে করাটা উচিত নয় বলেও মত তাঁদের।

তা হলে কী ভাবে এই ভাইরাসকে রোখা যাবে? এ নিয়ে ন’টি উপায় বলেছেন অভিজিৎ এবং এস্থার।

প্রথমত, এমন ভাবে করোনা-সচেতনতার প্রচার চালাতে হবে যাতে প্রতিটি পরিবারের অন্তত এক জন সদস্য এ নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকেন।

দ্বিতীয়ত, সংক্রমণ হবেই, এটা ধরে নিয়ে লক্ষ রাখতে হবে, যাতে করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তি কোনও ভাবেই সামাজিক ভাবে একঘরে না হয়ে যান বা তা লুকিয়ে না রাখেন।

তৃতীয়ত, সরকারের উচিত বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের বিষয়টি নজরে আনা।

চতুর্থত, গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তাঁরাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে রিপোর্ট করতে পারেন।

পঞ্চমত, করোনা সংক্রান্ত রিপোর্ট যাতে দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে একত্র করা যায়, তা-ও খেয়াল রাখতে হবে। যা দেশ জুড়ে করোনা-বিষয়ক পরিসংখ্যানের লেখচিত্র (গ্রাফ) তৈরিতে সহায়তা করবে।

ষষ্ঠত, চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি ভ্রাম্যমান টিম তৈরি করতে হবে। যাদের হাতে পরীক্ষার সরঞ্জাম থাকবে।

সপ্তমত, এই টিম যাতে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবহার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সদ্ব্যবহারের সুযোগ পায়, এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।

অষ্টমত, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির সুবিধা যাতে অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসরেরা পান, তা দেখা উচিত সরকারের। এর ফলে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময়ে তা কাজে আসবে।

পরিশেষে, করোনার প্রতিষেধক না পাওয়া পর্যন্ত সরকারের এই ‘যুদ্ধকালীন তৎপরতা’ চালিয়ে যেতে হবে। প্রতিষেধক মিললেও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো শক্তিশালী করার কাজ করে যেতে হবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন