Coronavirus

কারও মুখে মাস্ক, কেউ নিচ্ছেন স্যানিটাইজ়ার

গাড়ি থেকে সবে মাত্র নেমেছেন, তখনই পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক সাংসদ, তিনি একগাল হেসে হাতটা বাড়িয়ে দিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০৩:০৭
Share:

সতর্ক: কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশকে স্যানিটাইজ়ার দিচ্ছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ। বৃহস্পতিবার সংসদ চত্বরে। ছবি: প্রেম সিংহ

মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের সরকার ফেলে দিতে চাইছে বিজেপি— নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে এই ‘ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ নিয়ে আজ সকাল-সকাল সংসদ ভবনে হাজির কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তাঁকে স্বাগত জানাতে তখন দাঁড়িয়ে জয়রাম রমেশ, বিবেক তনখা। কিন্তু গাড়ি থেকে নামবেন কি না, তা নিয়েই একটু দোলাচলে আজাদ। পকেটে হাত ঢুকিয়ে ঠাওর করে নিলেন— স্যানিটাইজ়ারটা আছে তো?

Advertisement

গাড়ি থেকে সবে মাত্র নেমেছেন, তখনই পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক সাংসদ, তিনি একগাল হেসে হাতটা বাড়িয়ে দিলেন। স্বাভাবিক প্রবণতায় আজাদও তাঁর সঙ্গে হাত মেলালেন। এর পরে আর সময় নষ্ট করলেন না রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা, পকেট থেকে স্যানিটাইজ়ার বার করেই ফেললেন। নিজে ব্যবহারের পরে তা দিলেন জয়রাম, বিবেককেও। আজাদের উপদেশ, ‘‘এটি সঙ্গে রাখুন। ঘন ঘন হাতে মাখুন। করোনাভাইরাস থেকে অনেকটাই বাঁচাবে।’’ জয়রামের পরামর্শ, ‘‘হ্যান্ডশেক একেবারেই নয়, হাত জোর করে ‘নমস্তে’। গত কাল ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও বলেছেন, ভারতের যে ভাবে অভিবাদন জানানো হয়, তেমন করেই অভিবাদন জানাতে।’’

করোনা-আতঙ্ক ছড়িয়েছে সংসদেও। কংগ্রেসের শশী তারুর সোমবার থেকেই গলায় একটি ‘মিনি-পিউরিফায়ার’ ঝুলিয়ে ঘুরছেন। তাঁর দাবি, এতে নাকি নাকে তাজা হাওয়া যায়। মহারাষ্ট্রের নির্দল সাংসদ নবনীত রবি রানা মাস্ক পড়েই সংসদে আসছেন। আজ করোনা নিয়ে লোকসভায় বক্তৃতা দিলেন মাস্ক পরেই। লাদাখের বিজেপি সাংসদ সেরিং নামগিয়ালও কোনও ঝুঁকি নিচ্ছেন না। তিনিও সংসদে আসছেন মাস্ক পরে। মাস্ক পরিহিত আপ সাংসদ সুশীল গুপ্ত সংসদে ঢোকার আগে বললেন, ‘‘সংসদেও ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’-এর ব্যবস্থা থাকা উচিত। কে কোন ভাইরাস নিয়ে আসছেন, জানা উচিত!’’ এ নিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকেও চিঠি লিখে ফেলেছেন তিনি। সাংসদদের স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা নিয়ে এক কংগ্রেস নেতার মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন হোলিতে বড় জমায়েত বন্ধ করতে। কিন্তু সংসদে তো ঠাসাঠাসি করে বসতে হয়। সাংসদদের নিরাপত্তার কথা সরকারের ভাবা উচিত।’’

Advertisement

এর মধ্যেই আজ নতুন বিতর্ক জুড়লেন সাংসদেরা। ওয়াইএসআর কংগ্রেসের এক সাংসদ করমর্দনের বদলে ‘নমস্তে’ বলতে গিয়ে হিন্দু সংস্কৃতি টেনে আনেন। তাঁর সতীর্থ সাংসদেরাই প্রশ্ন তুললেন ‘আদাব’ নয় কেন? রাজস্থানের আরএলপি দলের সাংসদ হনুমান বেণীয়াল আবার বিতর্ক বাধালেন, করোনাতে গাঁধী পরিবারকে টেনে এনে। বললেন, ‘‘যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা আসছেন ইটালি থেকে। সনিয়া গাঁধী, রাহুল-প্রিয়ঙ্কাদেরও শারীরিক পরীক্ষা হোক, তাঁরাও ইটালি থেকে এসেছেন।’’ ব্যস! সঙ্গে সঙ্গে হট্টগোল। তেড়ে যান কংগ্রেস সাংসদেরা। কংগ্রেস তো নিন্দা করলই। এমনকি, বিজেপির সাংসদ হংসরাজ হংস বললেন, ‘‘আসলে ধর্ম ধর্মের শত্রু হয়, দেশ দেশের, ‘মালিক’ ক্ষুব্ধ হন। করোনা এই ঘৃণার ফল।’’

করোনা ঘিরেই এখন যত বিতর্ক! মোদীর আবেদনের পর হোলি খেলায় অনেকটাই রাশ টানা হচ্ছে। শনিবারের হোলি-মিলন অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলে আজ ঘোষণা করেছে আরএসএস। তবে বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার বাড়ি এখন সাজছে। শীঘ্রই তাঁর ছেলের বিয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement