Narendra Modi

কন্টেনমেন্ট জ়োন গড়ায় ফের জোর

মুখ্যমন্ত্রীরা জানান, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বড় সংখ্যক মানুষ। অনীহা বেড়েছে মাস্ক পরার ব্যাপারেও। এ ছাড়া একাধিক রাজ্যে লোকাল ট্রেন, মেট্রো বা বাসের মতো গণপরিবহণ ব্যবস্থা খুলে যাওয়ায় মানা হচ্ছে না পারস্পরিক দূরত্ববিধিও। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।।

দেশের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নতুন করে উদ্বেগজনক চেহারা নেওয়ায় আজ ফের এক প্রস্ত নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র। নতুন ওই নির্দেশিকায় নজরদারি, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার চিহ্নিতকরণ এবং সেখানে সংক্রমণ রোখার উপরেই মূলত জোর দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গত কাল সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের মতে, সেখানে বেশ কিছু রাজ্যই স্বীকার করে নেয় যে উৎসবের মরসুমের কারণে এক দিকে যেমন সংক্রমণ বেড়েছে, তেমনই করোনা সংক্রমিত ব্যক্তিদের সুস্থ হওয়ার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের মধ্যে গা-ছাড়া মনোভাবও লক্ষ করা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীরা জানান, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বড় সংখ্যক মানুষ। অনীহা বেড়েছে মাস্ক পরার ব্যাপারেও। এ ছাড়া একাধিক রাজ্যে লোকাল ট্রেন, মেট্রো বা বাসের মতো গণপরিবহণ ব্যবস্থা খুলে যাওয়ায় মানা হচ্ছে না পারস্পরিক দূরত্ববিধিও।

একে শীতের মরসুম শুরু হয়েছে, তার উপরে নিয়ম মানার প্রশ্নে এ ভাবে ঢিল দেওয়ায় সংক্রমণের হার আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এমসের চিকিৎসক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘মানুষকে বুঝতে হবে অতিমারি এখনও যায়নি। এখনও পূর্ণ শক্তিতে রয়েছে। সুতরাং এই সময়ে গা-ছাড়া মনোভাব নিলে উল্টে সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়াবে।’’ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তাই গত কাল বৈঠকের পরে আজই তড়িঘড়ি নতুন নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যা কার্যকর হবে ১ ডিসেম্বর থেকে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই নির্দেশিকা বলবৎ থাকবে।

Advertisement

দিন কয়েক আগে দিল্লি সরকারের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংক্রমিত গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বা কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে আরও বেশি করে নজরদারি ও প্রয়োজনে সংক্রমিত এলাকাগুলিকে ছোট অংশে ভেঙে দিয়ে নজর রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। আজ কেন্দ্রের নির্দেশিকায় সেই সুরেই বলা হয়েছে, সংক্রমণের শৃঙ্খলকে ভাঙতে সবচেয়ে জরুরি হল সংক্রমিত এলাকাকে চিহ্নিত করে সেটিকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। একমাত্র তা হলেই ভাইরাসের বিস্তার রোখা সম্ভব। নির্দেশিকায় স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনে ক্ষুদ্র আকারের কন্টেনমেন্ট জ়োন গড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতীতের মতো আজকের নির্দেশিকাতেও ওই গণ্ডিবদ্ধ এলাকাগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিষেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় আনাগোনা রোখার ব্যাপারে।

বিহারে স্পিকার পদ দখলে নিয়ে ‘চক্রব্যূহ’ দৃঢ় করল বিজেপি

স্বাস্থ্য কর্তাদের মতে, সংক্রমিত এলাকায় মানুষের গতিবিধি আটকাতে না পারলে সংক্রমণ ছড়ানো রোখা অসম্ভব। তাই জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বাদে বাকি সকলের প্রবেশ ও বার হওয়ার উপরে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে অতীতের মতোই গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে নজরদারি, জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকলেই পরীক্ষা করানো, সংক্রমিত ব্যক্তি ধরা পড়লে দ্রুত সেই ব্যক্তিকে আলাদা করার বিষয়ে ফের জোর দিয়েছে

কেন্দ্র। তবে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বিধিনিষেধ জারি করার অনুমতি থাকলেও, অন্যত্র কোনও ভাবেই লকডাউন করতে পারবে না রাজ্য প্রশাসন। অতীতের মতোই লকডাউনের ঘোষণা করতে হলে কেন্দ্রের সঙ্গে আগাম পরামর্শ করতে হবে। তবে চাইলে রাত্রিকালীন কার্ফু জারি করার ক্ষমতা থাকছে রাজ্যগুলির কাছে।

সরকারি দফতরগুলিতেও পারস্পরিক দূরত্ববিধি মেনে চলার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, যে শহরগুলির সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার দশ শতাংশের বেশি সেগুলিতে রাজ্যগুলি চাইলে দফতরের কাজের সময়সীমা পরিবর্তন করতে পারবে। কিংবা পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে কম সংখ্যক কর্মীর উপস্থিতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করতে পারবে। একই সঙ্গে সকলের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা অনিবার্য করতে দফতরে, কাজের জায়গায় বা সর্বজনীন এলাকায় মাস্ক না পরলে জরিমানা করতে পারবে রাজ্যগুলি। যে সংস্থাগুলিতে পঞ্চাশ জন বা তার বেশি কর্মী কাজের প্রয়োজনে উপস্থিত থাকছেন, সেখানে সংক্রমণ রুখতে কর্মীরা যাতে সকলেই আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেন, তার জন্যও সওয়াল করেছে কেন্দ্র। চাইলে স্থানীয় প্রশাসনও সেই এলাকার মানুষকে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ব্যবহার করার কথা বলতে পারবে। অতীতের মতোই আজও রাজ্যের ভিতরে ও দুই রাজ্যের মধ্যে ব্যক্তির বা সামগ্রীর যাতায়াতের প্রশ্নে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। এমনকি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সড়ক পথে বাণিজ্যিক আদানপ্রদানও আগের মতোই চালু থাকছে। এর জন্য আলাদা করে কোনও অনুমতিপত্র বা ই-পারমিটের প্রয়োজন নেই। কোনও প্রেক্ষাগৃহে সামাজিক, ধার্মিক, সাংস্কৃতিক, বিনোদন, শিক্ষা-ক্রীড়া সংক্রান্ত কোনও অনুষ্ঠানে সর্বাধিক দু’শো ব্যক্তির উপস্থিতিতে ছাড় দিয়েছিল কেন্দ্র। আজ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চাইলে সেই দর্শক সংখ্যা একশোতে কমিয়ে আনতে পারবে রাজ্যগুলি।

ধর্মঘটে চাকা ঘোরাতে রাজ্য ও পরিবহণ সংগঠনগুলির বৈঠক​

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন