Coronavirus

৯ মিনিটই চ্যালেঞ্জ বিদ্যুৎকর্তাদের

প্রধানমন্ত্রী আলো নেভানোর কথা ঘোষণার পরেই বিদ্যুৎ মন্ত্রকে কার্যত বিপদ-ঘণ্টি বেজে ওঠে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:০৬
Share:

রয়টার্সের তোলা প্রতীকী ছবি।

দেশের মানুষ ন’মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নিভিয়ে দিলে, তার পরে পাকাপাকি আঁধার নেমে আসবে না তো! আজ সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৯ মিনিটের ভিডিয়ো-বার্তায় ঘুম ছুটেছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তাদের।

Advertisement

করোনা-যুদ্ধের অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, আগামী রবিবার রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নিভিয়ে বারান্দা বা দরজায় মোমবাতি-প্রদীপ জ্বালাতে হবে। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের কর্তাদের দুশ্চিন্তা, এর ফলে রবিবার রাত ৯টায় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা আচমকা বেশ খানিকটা কমে যাবে। আবার ৯ মিনিট পরে অনেকখানি বেড়ে যাবে। এর ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহের গ্রিড ভেঙে পড়তে পারে। দেশে ‘ব্ল্যাকআউট’ হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিদ্যুৎ কর্তারা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।

প্রধানমন্ত্রী আলো নেভানোর কথা ঘোষণার পরেই বিদ্যুৎ মন্ত্রকে কার্যত বিপদ-ঘণ্টি বেজে ওঠে! তড়িঘড়ি বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন, পাওয়ার সিস্টেম অপারেশন কর্পোরেশন ও অন্যান্য সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “সকলে কাজে নেমে পড়েছেন। সবাই আত্মবিশ্বাসী যে, রবিবারের ঘটনার জন্য গ্রিডের ভারসাম্য রক্ষা করা যাবে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা-সঙ্কটে আঁধার কাটাতে ৯ মিনিটের দীপাবলি!

সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার বিষয়টি নিয়ে পিএমও এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রকের আধিকারিকদের কোনও আলোচনা হয়নি। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের একটি সূত্রও এই কথা মানছে। মোদীর ঘোষণা সম্পর্কে মন্ত্রকের আধিকারিকদের মত, এ হল গাড়ি প্রচণ্ড গতিতে চলতে চলতে ব্রেক চেপে রেখে, আবার আচমকা গতিবেগ বাড়ানোর চেষ্টা। এর ফলে গাড়ি বিগড়োবে কি না, তা গাড়িই জানে।

লকডাউনের ফলে কলকারখানা, অফিস বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে গিয়েছে। ফলে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের গ্রিডে সাধারণত যে লোড থাকে, সেই ৫০ হার্জ বজায় রাখা কঠিন হচ্ছে। তাই যে কোনও সময় গ্রিড ভেঙে পড়ার আশঙ্কা। কমাতে হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের যুক্তি, সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা বৃহস্পতিবারই ২৫ শতাংশ কম ছিল। কিন্তু রবিবারের জন্য চ্যালেঞ্জ হল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে ৯ মিনিট পরে তা বাড়ানো। তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আচমকা কোনও ইউনিট এ ভাবে বন্ধ করে ফের খুব শীঘ্রই তা চালু করা যায় না।

এনটিপিসি, ডিভিসি ও পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের প্রাক্তন আধিকারিকদের মতে, আলো বন্ধ হলেও, বাড়ির রেফ্রিজারেটর, টিভি, এসি চলবে। রাস্তার আলোর পাশাপাশি থানা, হাসপাতাল, নার্সিংহোমের মতো জরুরি পরিষেবাগুলিতেও সব চালু থাকবে। ফলে ন্যূনতম একটা চাহিদা

থাকবেই। তবুও চাহিদা হঠাৎই কমে গিয়ে বিদ্যুতের জোগান বেশি হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে লাইনের উপর চাপ বা ভোল্টেজ বেড়ে গিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিতে পারে। তাই রাত ৯টার আগে থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ কমানো, ৯টা ৯ মিনিটের পরে ফের তা বাড়িয়ে লাইনের ভোল্টেজ ঠিক রাখার প্রক্রিয়াটিই অঙ্ক কষে করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ কর্তারা জানতে পেরেছেন, প্রাথমিক ধাপগুলি ঠিক করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির আলোচনায় একটি খসড়া তৈরি হয়েছে। রবিবার একই সময়ে সারা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে ‘এক ছন্দে’ বাঁধতে হবে। তাই পদক্ষেপগুলি চূড়ান্ত হয়ে গেলেই রাজ্যগুলির কাছে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ পাঠানো হবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন