Coronavirus in India

প্যাকেজ চাইছে রাজ্য, ভাঁড়ারে টান কেন্দ্রেরই

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ দাবি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৫
Share:

ভিডিয়ো-বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

দুপুরেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়েছিলেন। বাকি দলগুলিও অভিযোগ তুলেছিল, কেন্দ্র রাজ্যের পাওনা মেটাচ্ছে না। সন্ধ্যায় নরেন্দ্র মোদী সরকার বিভিন্ন মন্ত্রকের খরচ বেঁধে দিয়ে বুঝিয়ে দিল, কেন্দ্রের নিজের ভাঁড়ারেই টান পড়েছে। তাই আর্থিক বছরের শুরুতেই খরচে বিধিনিষেধ জারি করতে হচ্ছে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে রাজ্যের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ দাবি করেন। সঙ্গে আরও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য আরও ৩৬ হাজার কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সব দলের সংসদীয় দলনেতাদের বৈঠকে সে কথা মনে করিয়ে সুদীপ বলেন, ‘‘করোনা-সঙ্কটের ফলে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের রাজকোষ ঘাটতি ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার অনুমতি চেয়েছেন। এখন রাজ্যের ঋণশোধের উপরে স্থগিতাদেশ জরুরি।’’ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও একাধিক বার চিঠি লিখে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ ২,৮৭৫ কোটি টাকা ও রাজস্ব ঘাটতি পূরণের অনুদান বাবদ ৫,০১৩ কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। রাজ্য স্তরে ডাক্তার-নার্সদের সুরক্ষা সামগ্রী, চিকিৎসা যন্ত্রের অভাব হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন সুদীপ। একই সুরে আজ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ প্রধানমন্ত্রীকে জানান, কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যগুলি করোনা-মোকাবিলায় কোনও আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে না। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিরও নালিশ, জিএসটি ক্ষতিপূরণ ও রাজ্যের অন্যান্য প্রাপ্য মিলছে না। অন্য দলের নেতারাও একই দাবি তোলেন।

প্রশ্নের মুখে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের জবাব ছিল, এমনিতেই আর্থিক ঝিমুনি, তার পরে লকডাউনের জেরে কেন্দ্রের রাজস্ব আয় কমে গিয়েছে। ফলে রাজকোষে টান পড়েছে। এর পরেই অর্থ মন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য, ওষুধ, কৃষি, গ্রামোন্নয়ন, রেল, খাদ্য ও গণবণ্টন, বিমান ও বস্ত্র মন্ত্রক ছাড়া বাকি সব মন্ত্রকের অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসের খরচে বিধিনিষেধ আরোপ করে। স্বরাষ্ট্র, ছোট-মাঝারি শিল্প-সহ একগুচ্ছ মন্ত্রকে এপ্রিল-জুনে মোট বাজেটের ২০ শতাংশের বেশি অর্থ ব্যয় করা চলবে না। শিক্ষা, আবাসনের মতো বেশ কিছু মন্ত্রকে এই বিধিনিষেধ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। সাধারণত বছরের শেষে এই কড়াকড়ি হয়। করোনা-সঙ্কট ও লকডাউনের জোড়া ধাক্কায় এ বার বছরের শুরুতেই টান পড়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ১১ই মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা মোদীর, লকডাউন বৃদ্ধি চেয়ে সওয়াল

দু’দিন আগেই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে সাংসদদের এক বছরের জন্য বেতন ৩০% কমানো হয়েছে। সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকাও দু’বছরের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। আজ গুলাম নবি, সুদীপ থেকে শিবসেনা, ডিএমকে, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো বহু দল এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে। সুদীপ বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এক পয়সাও বেতন নেন না। দরকার হলে আমাদের সাংসদদের বেতন পুরোটাই কেটে নিন। কিন্তু এমপিল্যাডের টাকা স্থানীয় এলাকার চাহিদা অনুযায়ী খরচ হয়। তাতে রাজ্য স্তরে করোনা-মোকাবিলা করা যাবে।’’ আজাদ জানান, অনেকে বলেছেন দু’বছরের বদলে এক বছর সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা স্থগিত রাখা হোক। ওই টাকা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জন্য খরচ করা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন