দুর্নীতির পাঁকে ডুবে রয়েছে বরাক— এমনই দাবি করলেন অসমের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। ‘দুর্নীতির পীঠস্থান’ বরাক উপত্যকাকে তিনি অসম থেকে বের করে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন। ডিমা হাসাও, কার্বি আংলং, ধুবরি, গোয়ালপাড়া-সহ ১১টি জেলাকে নিয়ে নতুন অসম গড়ার কথাও বলেছেন।
গুয়াহাটিতে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের জনসংযোগ বিভাগের প্রাক্তন সঞ্চালক ধীরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘বরাক দুর্নীতির পীঠস্থান। সেখান থেকে অসম সরকার কোনও রাজস্ব পায় না। বরাকের মানুষ অসমিয়া ভাষায় কোনও বিজ্ঞাপনও সহ্য করতে পারেন না। তাই অসম থেকে বরাককে বাদ দেওয়া উচিত।’’ তাঁর বক্তব্য, ডিমা হাসাও ও কার্বি আংলংয়ের পরিস্থিতিও এক। উল্টে ওই দুই পাহাড়ি জেলার জন্য রাজ্য সরকারকে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হচ্ছে। যা চলে যাচ্ছে নির্দিষ্ট কয়েক জনের পকেটে। পাহাড়ি জেলার বাসিন্দারাও অসমিয়া ভাষা কার্যত বর্জন করেছেন। তাঁরা কথা বলে ইংরেজিতে। সে জন্য ওই দু’টি জেলাকে স্বায়ত্ত্বশাসন দিয়ে অসম থেকে আলাদা করে দেওয়া উচিত। ধীরেন্দ্রবাবু আরও জানান, ধুবরি ও গোয়ালপাড়া জেলায় অবৈধ ভাবে এ দেশে ঢোকা বাংলাদেশিদের ভিড় জমেছে। সেখানে অসমিয়াদের অস্তিত্ব বিপন্ন। তাই ওই দুই জেলাকেও অসমের মানচিত্রের বাইরে বের করে দেওয়া হোক।
বিতর্কিত ওই মন্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বরাকে। তবে আজ ডিমাসা স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রাক্তন সভাপতি তথা হিল স্টেট ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিমা হাসাও জেলা সভাপতি কেবারন নাইডিং ধীরেন্দ্রনাথবাবুর মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পাহাড়ি জেলাকে অবহেলার চোখে দেখেছে। তিন দশক ধরে বঞ্চনার জেরে জেলার মানুষ স্বশাসনের দাবি করে আসছে। পৃথক রাজ্য গঠিত হলে পাহাড়ি জেলার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।’’ কিন্তু ডিমা হাসাও থেকে রাজ্য সরকার কোনও রাজস্ব পায় না বলে ধীরেন্দ্রবাবুর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন তিনি। নাইডিংয়ের বক্তব্য, কপিলি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদ এক টাকা রাজস্বও পায় না। তা নিয়ে যায় মেঘালয় ও অসম সরকার। তাঁর মন্তব্য, ‘‘অনেক পুরনো সময় থেকেই পাহাড়ি জেলায় বাংলায় কথা বলেন। পার্বত্য
পরিষদে জমির পাট্টাও লেখা হয় বাংলায়। অসমে থাকতে হলে অসমিয়া ভাষা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক হতে পারে না।’’