শবরীমালা মন্দির। —ফাইল চিত্র।
কেরলের শবরীমালা আয়াপ্পন মন্দিরের বিগ্রহের ‘উধাও’ হওয়া সোনার হদিস মিলল। বিগ্রহ মেরামতের পর বাড়তি যে সোনা ছিল, সেগুলি এক দুঃস্থ তরুণীর বিয়ের কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন ‘স্পনসর’ উন্নিকৃষ্ণন পত্তি। এমনই উল্লেখ করা হয়েছে এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগ্রহের বাড়তি সোনা বিয়েতে ব্যবহারের জন্য ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড (টিডিবি)-এর কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন উন্নিকৃষ্ণন। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সোনা ‘উধাও’ নিয়ে তদন্তে আদালতের হাতে যে রিপোর্ট এসেছে, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগ্রহের সোনা বিয়ের কাজে ব্যবহার করতে চান উন্নিকৃষ্ণন।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে চিঠি টিডিবি-কে দিয়েছিলেন উন্নিকৃষ্ণন, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘বিগ্রহ মেরামতের পর কিছু সোনা রয়ে গিয়েছে। এই সোনা এক দুঃস্থ তরুণীর বিয়ের কাজে ব্যবহার করতে চাই। টিডিবি-র সহযোগিতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আপনাদের মতামত অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’’ টিডিবি-কে দেওয়া উন্নিকৃষ্ণনের সেই চিঠির ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বরের দেবস্বমের সম্পাদক ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠান, বিগ্রহের বাড়তি সোনা দিয়ে কী করা উচিত। এই ঘটনায় ‘উদ্বেগ প্রকাশ’ করেছে কেরল হাই কোর্ট। আদালতের মতে, এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শুধু তা-ই নয়, এই ঘটনা ভক্তদের মনে অবিশ্বাসের ছাপ ফেলবে।
এই ঘটনার তদন্তের জন্য আদালত আগেই সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। মন্দিরের বিগ্রহের সোনা নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা ঘিরে গোটা কেরলে শোরগোল চলছে। রাজ্য রাজনীতিও উত্তাল। অভিযোগ ওঠে, ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছরের মধ্যে মন্দিরের বিগ্রহের ‘ওজন হ্রাস’ পেয়েছে। আর তা থেকেই সন্দেহের উদ্রেক হয়। তার পরই এই বিষয়ে মামলা। বুধবার বিচারপতি রাজা বিজয়রাঘবন ভি এবং বিচারপতি কেভি জয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। তখন আদালত নির্দেশ দেয়, দ্রুত এই বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৯ সালে বিগ্রহের ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বিগ্রহের ওজন ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম। কী ভাবে বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেল, তা জানতে চেয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করে হাই কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ১৯৯৯ সালে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ছ’বছরের মধ্যে বিগ্রহ মেরামতের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বিতর্কের সূত্রপাত ২০১৯ সালে। ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড (টিডিবি) বিগ্রহ মেরামতের ব্যবস্থা করে। এবং তা করা হয় স্পেশ্যাল কমিশনার বা আদালতের অনুমোদন ছাড়াই। লাইভ ল-এর প্রতিবেদন বলছে, চেন্নাইয়ের একটি সংস্থাকে দিয়ে সেই কাজ করানো হয়। তখনই জানা যায়, বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেয়েছে। তার পরই আদালতে মামলা হয়।