Bombay high Court

বিচারপতি মনে করালেন টাইটানিক

প্রধান বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘‘টাইটানিক ছবিটা দেখেছেন? জাহাজের ক্যাপ্টেনকে মনে পড়ে? সবাই জাহাজ থেকে না-বেরোনো পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতেই হত।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ০৭:০১
Share:

বম্বে হাইকোর্ট।

বম্বে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলাটিতে আর্জি জানানো হয়েছিল, বিচারপতি, আইনজীবী এবং আদালতের কর্মীদের ‘ফ্রন্টলাইন কর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাঁদের করোনার টিকাকরণের নির্দেশ দেওয়া হোক। সেই মামলায় প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ জানিয়েছে, কোনও কোনও সিদ্ধান্ত প্রশাসনের বিচার-বুদ্ধির উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। বরং শুধু বিচার বিভাগের জন্য এমন আর্জি জানানোটা ‘স্বার্থপরতা’।

Advertisement

প্রধান বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘‘টাইটানিক ছবিটা দেখেছেন? জাহাজের ক্যাপ্টেনকে মনে পড়ে? সবাই জাহাজ থেকে না-বেরোনো পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতেই হত। সবাই টিকা পেয়ে যান,
তার পরে বিচারপতিরা। এখানে আমিই ক্যাপ্টেন।’’

মামলাটি করেছিলেন বৈষ্ণবী গোলাভে এবং যোগেশ মোরবালে নামে মুম্বইয়ের দুই আইনজীবী। তাঁদের যুক্তি ছিল, অতিমারির সময়ে সংক্রমণের ভয় সত্ত্বেও হাইকোর্ট এবং সমস্ত বিচারপতি, আইনজীবী, কর্মীরা কাজ করে গিয়েছেন। উত্তরে বেঞ্চ বলে, ‘‘তা হলে বেসরকারি সংস্থার কর্মী কিংবা ডাব্বাওয়ালাদের জন্যও জনস্বার্থ মামলা হবে না কেন? সে ভাবে দেখলে তো সবাই ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার।’’

Advertisement

সরকার টিকাকরণ কর্মসূচি খুব ভালই চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘বলুন তো (সরকারের) নীতিতে ভুলটা কোথায়? যথেচ্ছাচার না-হলে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্তে আদালত নাক গলাতে পারে না।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অনিল সিংহ জানান, অন্যান্য হাইকোর্টে এই ধরনের অনেক মামলা ঝুলে রয়েছে। আদালত অবশ্য তাঁকে বলেছে যে, সরকার বিচার বিভাগের টিকাকরণের সিদ্ধান্ত নিলে যেন লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির আইনজীবীদের কথা আগে বিবেচনা করা হয়।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার ছুঁয়েছে। মৃত বেড়েছে ১৩৩ জন। এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে ‘ইন্ট্রানেজ়াল’ বা নাকের মধ্যে কোভিডের টিকা দেওয়ার পরীক্ষার প্রথম পর্ব শুরু করল ভারত বায়োটেক। সূত্রের খবর, প্রথম দিনে হায়দরাবাদ, নাগপুর, পটনা এবং চেন্নাইয়ে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

আজ প্রথম ডোজ় দেওয়ার ৪২ দিন পরে তার অন্তর্বর্তী ফলাফল খতিয়ে দেখা হবে। সব মিলিয়ে ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবকের এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি আজই জানিয়ে দিয়েছে যে, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকা আর পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর্যায়ে নেই। কাজেই এই টিকা নিতে গেলে গ্রহীতার কোনও সম্মতিপত্র লাগবে না। প্রসঙ্গত, কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার অন্তর্বর্তী ফলাফলে ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে, এই টিকা ৮০.৬ শতাংশ কার্যকর।

এ দিকে, ভারতে দ্রুত টিকার ছাড়পত্র এবং দাম নির্ধারণের স্বাধীনতা মেলার আশ্বাস পেলে এ দেশেই টিকা তৈরি করতে চায় আমেরিকান সংস্থা ফাইজ়ার। সূত্রের খবর, এই কথা ইতিমধ্যেই ভারত সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে তারা। জরুরি ভিত্তিতে টিকা প্রয়োগের ছাড়পত্র চেয়ে ভারতে প্রথম আবেদন করেছিল ফাইজ়ারই। কিন্তু এ দেশে কোনও পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ছাড়া ফাইজ়ারের টিকা ব্যবহারের সবুজ সঙ্কেত দিতে চায়নি ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

একটি সূত্রের দাবি, আর এক আমেরিকান সংস্থা মডার্নাও যৌথ উদ্যোগে ভারতে টিকা তৈরিতে আগ্রহী। তবে বিষয়টির নিশ্চয়তা মেলেনি। কেন্দ্রের তরফেও এ নিয়ে মন্তব্য করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন