প্রতীকী ছবি।
বিতর্ক গোরক্ষকদের তাণ্ডব নিয়ে। আর তাতে নাম জড়াল পশ্চিমবঙ্গেরও।
আজ সকালে রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে রীতিমতো টেবিল চাপড়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির দাবি করেন, গুজরাত, হরিয়ানার মতো পশ্চিমবঙ্গেও সক্রিয় গোরক্ষকেরা। কিন্তু রাজ্য রিপোর্ট পাঠাচ্ছে না। যা শুনেই প্রতিবাদ জানান তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। পাল্টা আক্রমণে বলেন, কেন্দ্র ভুল তথ্য দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। শাসক দলকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি আর এক তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে বলতে গিয়ে বসিরহাটে অশান্তির পিছনে বিজেপির হাত ছিল বলে অভিযোগ আনেন ডেরেক। আপত্তি জানান মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন দু’জনে।
দাদরি থেকে উনা— গোরক্ষকের অতিসক্রিয়তায় অস্বস্তিতে রয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। একাধিক বার মুখ খুলতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকেও। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় আজ প্রশ্নোত্তর পর্বে সমাজবাদী পার্টির নরেশ অগ্রবাল গোরক্ষকদের উৎপাত বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠকের দাবি করেন। যা খারিজ করে আহির জানান, প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই সর্বদল বৈঠকে এ নিয়ে বার্তা দিয়েছেন। তা ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। মন্ত্রী বলেন, হরিয়ানা বা ঝাড়খণ্ড যেখানে এমন ঘটনা হয়েছে, সেখানে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আহিরের দাবি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গেও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গ এখনও রিপোর্ট জমা দেয়নি।’’ আহিরের মন্তব্য শুনে অবাক হয়ে যান সুখেন্দুবাবু। তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ভিত্তিহীন কথা বলছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এ দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলতে পারেনি রাজ্যের কোথায় এমন ঘটনা ঘটেছে। সূত্রের খবর, মাস খানেক আগে উত্তর দিনাজপুরে গরু চুরির অভিযোগে গণপিটুনির শিকার হন তিন ব্যক্তি। সম্ভবত আহির সেই ঘটনার কথাই বোঝাতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ছেলের চিন্তাতেই কি মোদীর পাশে মুলায়ম
রাজ্যসভায় এ দিন দলিত-সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে আলোচনায় শাসক শিবিরকে আক্রমণ শানান ডেরেক। তাঁর দাবি, বসিরহাটে অশান্তি ছড়ানোর পিছনে মূল কারিগর ছিল বিজেপি। ডেরেক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের কুমিল্লার সাম্প্রদায়িক অশান্তির ছবি দেখিয়ে বসিরহাটের মানুষকে প্ররোচিত করার চেষ্টা হয়। অশান্তি ছড়াতে ব্যবহার করা হয় ভোজপুরি সিনেমার ছবিও।’’
বিরোধী নেতারা আজ একযোগে দাবি করেন, গোরক্ষার নামে গোটা দেশের সাম্প্রদায়িক পরিবেশ বিষিয়ে তুলছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার। যদিও ডেরেকের দাবি, বিজেপির এই পরিকল্পনা সফল হবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরতে ডেরেক বলেন, ‘‘আমি খ্রিস্টান। কিন্তু বড় হয়েছি কলকাতার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায়। যার নাম জামির লেন। যা এক জন মুসলিমের নামে।’’