তৃণমূল নয়, কংগ্রেসই ভাল, বলে রাখছে বাম

ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনে বিরোধীদের পক্ষ থেকে কংগ্রেসই যাতে প্রার্থী দেয়, সেই বার্তা এআইসিসি-কে দিয়ে রাখল সিপিএম। তৃণমূল কোনও প্রার্থীর নাম না তুললেও সিপিএম আগাম সতর্কতা নিচ্ছে, কারণ তাদের চিন্তায় বাংলা এবং বিজেপি!

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৪:১২
Share:

বিজেপিকে ঠেকাতে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে বিরোধী জোটের তরফে সর্বসম্মত প্রার্থী চাইছেন রাহুল গাঁধী। প্রয়োজনে সেই পদে তৃণমূল প্রার্থী দিলে তাঁকে সমর্থন করতেও কংগ্রেসের আপত্তি নেই। কিন্তু ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনে বিরোধীদের পক্ষ থেকে কংগ্রেসই যাতে প্রার্থী দেয়, সেই বার্তা এআইসিসি-কে দিয়ে রাখল সিপিএম। তৃণমূল কোনও প্রার্থীর নাম না তুললেও সিপিএম আগাম সতর্কতা নিচ্ছে, কারণ তাদের চিন্তায় বাংলা এবং বিজেপি!

Advertisement

প্রকাশ কারাটদের কট্টরপন্থার সৌজন্যে এই মুহূর্তে সংসদের উচ্চ কক্ষে বাংলা থেকে বামেদের কোনও সাংসদই নেই! ফলে, তৃণমূলের কেউ শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হলেও বাংলা থেকে সরাসরি সিপিএমের কোনও প্রতিনিধির তাঁকে ভোট দেওয়ার প্রশ্ন নেই। তবে কেরলের তিন, তামিলনাড়ুর দুই এবং ত্রিপুরার এক— মোট ছ’জন বাম সাংসদ আছেন রাজ্যসভায়। বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে তৃণমূলের প্রার্থীকে সমর্থন করতে সিপিএমের কেরল ব্রিগেডের বিশেষ আপত্তি নেই। কিন্তু সিপিএমের শাঁখের করাত হয়ে দেখা দিয়েছে বাংলাই!

গুলাম নবি আজাদ ও আহমেদ পটেলকে ডেপুটি চেয়ারম্যান পদ নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলার ভার দিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল ইউরোপ গিয়েছেন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আহমেদকে বার্তা দিয়েছেন, বহু বছর ধরে ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে যেমন কংগ্রেসের কেউ থেকেছেন, এ বারও নির্বাচন হলে সেই দলেরই প্রার্থী দেওয়া হোক। রাজ্যসভায় সংখ্যার বিচারেও বিরোধীদের মধ্যে কংগ্রেস এগিয়ে। কিন্তু কংগ্রেস পিছনে থেকে অন্য কোনও অ-বিজেপি দলকে এগিয়ে দিলে আঞ্চলিক রাজনীতির সমীকরণে নানা সমস্যা দেখা দেবে। কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, রাহুল ফিরলে তাঁর মত নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলোচনা শুরু হবে। সিপিএমের পলিটব্যুরোর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে এখনও বিরোধীদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে যে প্রার্থী থাকলে বাকি বিরোধীদের সহমতে পৌঁছনো মসৃণ হবে, সেই পথেই এগোনো উচিত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীর সামনেই কাশ্মীর নিয়ে ফোঁস রাজনাথের

ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে ১৯৯২ সালের পরে এ বারই প্রথম ফের নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সিপিএমের আশঙ্কা, কোনও কারণে তৃণমূলের প্রার্থীকে সামনে রেখে কংগ্রেস ওই নির্বাচন লড়তে নামলে এবং বামেরা তার থেকে দূরত্ব রাখলে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে ফাটল তৈরির অভিযোগ উঠবে। আবার বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দিতে হলে বাংলায় বিজেপি প্রচারের রসদ পাবে যে, সিপিএম আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমঝোতা করে চলছে! সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বাংলায় এমনিতেই কংগ্রেস এবং বাম ভোট ভেঙে বিজেপি বাড়ছে। এর পরে ডেপুটি চেয়ারম্যান নিয়ে নতুন কোনও হাতিয়ার লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি পেয়ে গেলে বিপদ!’’ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন মমতার সঙ্গে একসুর হওয়ায় যে অশনি সঙ্কেত দেখেছিল বাংলার সিপিএম, সেই আশঙ্কাই ফের তাড়া করছে তাদের!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement