Sitaram Yechury

Sitaram Yechury: কংগ্রেস ঠিক করুক কী করবে, বার্তা ইয়েচুরিরও

আমন্ত্রিত আর এক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে ভি টমাস এমন ফতোয়ার প্রেক্ষিতে কী করবেন? তিনি জানিয়েছেন, এক দিনের মধ্যেই তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করবেন। স্ট্যালিনদের নিয়ে ওই আলোচনা হওয়ার কথা ৯ এপ্রিল, কান্নুরের জওহর স্টেডিয়ামে।   

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কান্নুর (কেরল) শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫২
Share:

পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে কংগ্রেসের প্রতি হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেল সীতারাম ইয়েচুরির কণ্ঠে। —নিজস্ব চিত্র।

দেশে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে কংগ্রেস-সহ অনেক দলের মুখ বন্ধ করে রাখা যায়। এ বার পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে কংগ্রেসের প্রতি হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেল সীতারাম ইয়েচুরির কণ্ঠেও। নাম না করে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন বলে রাজনৈতিক শিবিরের মত।

Advertisement

বাম রাজনীতিতে ইয়েচুরি বরাবরই গণতান্ত্রিক ঐক্য তথা ‘কংগ্রেসপন্থী’ বলে পরিচিত। তাঁর দলের ২৩তম পার্টি কংগ্রেস হচ্ছে কেরলে, যে রাজ্যের সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে আবার কংগ্রেসের সম্পর্ক অহি-নকুল! এই প্রেক্ষাপটে বুধবার কান্নুরে পার্টি কংগ্রেসের উদ্বোধনী বক্তৃতায় ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস এবং আরও কিছু আঞ্চলিক দলকে নিজেদের ঘর গোছাতে হবে এবং ঠিক করতে হবে, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করার জন্য তারা কোথায় দাঁড়িয়ে। দোদুল্যমানতা বা সিদ্ধান্তহীনতা এবং আপসকামী মনোভাব থাকলে এই সব দলগুলো থেকে লোক বেরিয়ে গিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিরই হাত শক্ত করবে। অভিজ্ঞতা অন্তত তা-ই দেখাচ্ছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতাকে হারাতে পারে একমাত্র আপসহীন ধর্মনিরপেক্ষতা।’’

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, ইয়েচুরি নাম না করে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূলকেও। কারণ, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি এবং উল্টো পথেও যাতায়াতের অজস্র উদাহরণ রয়েছে। কংগ্রেস ভেঙেও বিজেপিতে নেতাদের চলে যাওয়ার প্রবণতা ব্যাখ্যা করে সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য এম এ বেবি পরে বলেছেন, ‘‘শয়তানের সঙ্গে ভোজ খাওয়ার একটা প্রবচন আছে। আমরা কংগ্রেসকে শয়তান বলছি না। বলতে চাইছি, বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসকে সমর্থন করতেও রাজি। কিন্তু জেতার পরে সেই কংগ্রেস নেতা বিজেপিতে যোগ দেবেন না, তার কোনও নিশ্চয়তা তো রাহুল গান্ধীও দিতে পারবেন না!’’

Advertisement

বিজেপি-আরএসএসের সাম্প্রদায়িক নীতিকে পরাস্ত করতে বাম, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যের পথ থেকে সরে আসার কোনও ইঙ্গিত সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক রিপোর্টে নেই। ইয়েচুরি সে কথাও বলেছেন। কিন্তু কংগ্রেসের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স যে বিরোধী শিবিরে রাহুলের দলকে নিয়ে সংশয় ও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, পার্টি কংগ্রেসের প্রথম দিনেই তা স্পষ্ট। ই কে নায়নার অ্যাকাডেমি চত্বরে দলের পতাকা তোলার পরে পলিটবুরোর প্রবীণ সদস্য এস আর পিল্লাই বলেছেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট করার দায়িত্ব কংগ্রেসকে নিতে হবে।’’ আবার পার্টি কংগ্রেসের ভিতরের মঞ্চে পলিটবুরোর আর এক সদস্য এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের মন্তব্য, ‘‘বিজেপি আর কংগ্রেস একই আর্থিক নীতি মেনে চলে।’’

এমতাবস্থায় কংগ্রেসকে ঘিরে টানাপড়েন এখন তুঙ্গে। পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনায় বক্তৃতা করার জন্য সিপিএমের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কান্নুর আসছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। যিনি কয়েক দিন আগেই দিল্লিতে দলের দফতর উদ্বোধন করিয়েছেন সনিয়া গান্ধীকে দিয়ে। কিন্তু ওই আলোচনায় তাঁদের কেউ যোগ দিলে দল ছেড়ে দিতে হবে বলে ফতোয়া জারি করেছেন কেরল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরন! সনিয়ার পরামর্শে সিপিএমের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছেন শশী তারুর। আমন্ত্রিত আর এক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে ভি টমাস এমন ফতোয়ার প্রেক্ষিতে কী করবেন? তিনি জানিয়েছেন, এক দিনের মধ্যেই তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করবেন। স্ট্যালিনদের নিয়ে ওই আলোচনা হওয়ার কথা ৯ এপ্রিল, কান্নুরের জওহর স্টেডিয়ামে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন