সিআরপিএফ জওয়ান মুনির খান এবং তাঁর পাকিস্তানি স্ত্রী মিনাল খান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পাকিস্তানি তরুণী মিনাল খানকে বিয়ে করেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের সিআরপিএফ জওয়ান মুনির খান। নিউজ় ১৮-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সিআরপিএফ অনুমতি দেওয়ার আগেই ওই জওয়ান বিয়ে করেন, যা পদ্ধতিগত বিষয়কে অমান্য করা এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলার শামিল বলে মনে করা হয়। আর সে কারণেই সিআরপিএফ মুনির খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিআরপিএফ জানিয়েছে, বর্তমানে ৪১ ব্যাটেলিয়নে কর্মরত কনস্টেবল মুনির। পাকিস্তানি তরুণীকে বিয়ে করার জন্য অনুমতিপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, তাঁর দফতর এ বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার আগেই গত বছরের ২৪ মে অনলাইনে বিয়ের আনুষ্ঠানিক পর্ব সেরে ফেলেছেন। কেন তিনি দফতরের ছাড়পত্রের অপেক্ষা না করেই বিয়ে করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর সেই সূত্রেই ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করা হতে পারে।
প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত গাফিলতি লক্ষ করা গিয়েছে বলে সিআরপিএফের এক সূত্রের খবর। দফতরকে কোনও রকম খবর না দিয়ে বিয়ে করা, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কী ভাবে ভারতে থাকছিলেন মুনিরের পাকিস্তানি স্ত্রী, এ রকম বেশ কিছু বিষয়ে স্পষ্ট গাফিলতি লক্ষ করা গিয়েছে বলে সিআরপিএফ সূত্রের খবর। এ সব বিষয় কনস্টবলের আচরণে সন্দেহ উদ্রেক করে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন বলছে, পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের এই তরুণীর সঙ্গে অনলাইনে গত বছরের মে মাসে বিয়ে হয়েছিল সিআরপিএফ মুনির খানের। এ বছরের মার্চে জম্মু-কাশ্মীরে পৌঁছোন মিনাল। কারণ, জম্মু-কাশ্মীরেই এখন তাঁর শ্বশুরবাড়ি। ‘গ্রেটার কাশ্মীর’-এর প্রতিবেদন বলছে, পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা মিনাল। ন’বছর ধরে ভিসার জন্য অপেক্ষা করার পর এ বছরে মার্চে স্বল্পমেয়াদের ভিসায় ভারতে আসেন মিনাল। কিন্তু ২২ মার্চ তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেই পহেলগাঁও কাণ্ডের জেরে সমস্ত পাক নাগরিককে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় সরকার। ভারত ছাড়ার নোটিস পান মিনালও।
কিন্তু লাদাখ হাইকোর্টে আবেদন জানান মিনাল এবং স্বামী মুনির। আদালতে মিনাল আবেদন জানান, ভারতে থাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসার আবেদন করেছেন তিনি। তা ছাড়া এক জন ভারতীয়কে বিয়ে করেছেন। সেই সূত্রে তাঁকে এ দেশে স্বামীর সঙ্গে থাকতে দেওয়া উচিত। মিনালের আইনজীবী অঙ্কুর বলেন, ‘‘ভারত সরকারের এই নির্দেশ সেই সব পাক নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যাঁরা কারও আত্মীয়তার সূত্রে এ দেশে এসেছেন। কিন্তু মিনাল একজন ভারতীয়কে বিয়ে করেছেন এবং তা সম্পূর্ণ বৈধ ভাবে।’’ মিনালের এই আর্জিতে সাড়া দিয়েছে আদালত। তার পরই পাকিস্তানে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।