ফণীর দাপটে অঙ্কে গোলমাল, দিন গুনছেন অভিযাত্রীরা

এই মুহূর্তে হিমালয়ের চারটি আট হাজারী শৃঙ্গে অভিযানে গিয়েছেন আট জন বাঙালি পর্বতারোহী।

Advertisement

স্বাতী মল্লিক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ০২:০২
Share:

ঝোড়ো হাওয়ায় কোথাও টেন্টের পোল ভেঙেছে, কোথাও আবার তুষারধসে তলিয়ে গিয়েছে ফিক্সড রোপের একাংশ। বানচাল পুরনো সব হিসেব। হিমালয়ে আট হাজারী শৃঙ্গ অভিযানে যাওয়া বাঙালি পর্বতারোহীরা সেখানে বসে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপট। কয়েক দিন ক্যাম্পবন্দি হয়ে থাকার পরে এখন তাঁদের নজর পরবর্তী ‘ওয়েদার উইন্ডো’র দিকে।

Advertisement

এই মুহূর্তে হিমালয়ের চারটি আট হাজারী শৃঙ্গে অভিযানে গিয়েছেন আট জন বাঙালি পর্বতারোহী। বাংলা থেকে এখন এভারেস্ট অভিযানে যাওয়া একমাত্র পর্বতারোহী, চন্দননগরের পিয়ালি বসাক জানাচ্ছেন, ফণীর কারণে আবহাওয়া যথেষ্ট খারাপ ছিল সেখানে। গত শুক্রবার ফণী ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার আগেই ক্যাম্প থ্রি থেকে খুম্বু আইসফল পেরিয়ে বেসক্যাম্পে নেমে এসেছিলেন তাঁরা। পিয়ালি বলছেন, ‘‘ঝড়ের পরদিন শেরপারা ক্যাম্প টু-তে গিয়ে দেখেন, কিছু টেন্ট উড়ে গিয়েছে। আমাদের টেন্টের একটা পোল ভেঙে গিয়েছে। আর যাঁদের টেন্ট পাথরের উপরে লাগানো ছিল, কিন্তু পেগ পোঁতা ছিল না, তাদেরগুলো উড়ে গিয়েছে।’’

তবে মে মাসের মাঝামাঝি ‘সামিট পুশের’ কথা ভাবছে অভিযাত্রী দলগুলি। ‘‘শেরপারা উপরের ক্যাম্পে টেন্ট ঠিকঠাক করতে গিয়েছেন। সাউথ কোল পর্যন্ত রুট খোলা হয়ে গিয়েছে। ১০-১২ তারিখ নাগাদ সামিট পুশে বেরোব’’— হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে লিখেছেন পিয়ালি।

Advertisement

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ তৈরি হলে তার প্রভাব সরাসরি পড়ে হিমালয়ে। ফলে কাঞ্চনজঙ্ঘাতেও ফণী দাপট দেখিয়েছে। বিপ্লব বৈদ্য, রুদ্রপ্রসাদ হালদার, কুন্তল কাঁড়ার, শেখ সাহাবুদ্দিন, রমেশ রায়— বাংলা থেকে এই পাঁচ এভারেস্টজয়ী এখন কাঞ্চনজঙ্ঘার বেসক্যাম্পে। রুদ্রপ্রসাদ মেসেজে বলছেন, ‘‘ফণীর জন্য ৭-৮ তারিখে আমাদের সামিট পুশের পরিকল্পনা পিছিয়ে গিয়েছে। এখন নতুন করে অনেক জায়গায় ফিক্সড রোপ লাগাতে হবে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, গত শুক্রবার সকাল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্পে আবহাওয়া খারাপ ছিল, আড়াই ফুট তুষারপাত হওয়া ছাড়াও তালুঙ, জানু বা কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গের দিক থেকে ঝুলন্ত হিমবাহ ভেঙে পড়তে দেখেন তাঁরা।

ফণীর কারণে প্রবল ঝড় যাতে ক্যাম্প টু থেকে সরঞ্জাম উড়িয়ে না নিয়ে যায়, সে জন্য সেখানে অতিরিক্ত জিনিস রেখে এসেছিলেন রুদ্রপ্রসাদেরা। সে সবই কয়েক ফুট বরফ খুঁড়ে বার করতে হবে অভিযাত্রীদের। কারণ, রুদ্রপ্রসাদ বলেছেন, ‘‘বেসক্যাম্প ও ক্যাম্প ওয়ানের মাঝে ৫০০ মিটার ফিক্সড রোপ তুষারধস নিয়ে চলে গিয়েছে। ক্যাম্প ওয়ানের পরে কী অবস্থা বোঝা যাচ্ছে না।’’ তবে চিনের দিকে হওয়ায় ফণী প্রভাব ফেলতে পারেনি চো ইয়ু শৃঙ্গে। ক্যাম্প ওয়ান থেকে পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস মেসেজে লিখেছেন, ‘‘ফণীর প্রভাব পড়েনি, আবহাওয়া আগে থেকেই খারাপ ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন