অপরাধ কোনও ভাবেই নিয়ন্ত্রণ আনতে পারছে না বিহার পুলিশ। এ দিনও রাজ্যের দু’টি জেলায় দিনেদুপুরে ব্যাঙ্ক ও ট্রেনে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তোলা না দেওয়ায় গুলি করা হয়েছে ব্যবসায়ী, আইনজীবীর বাড়ির কর্মচারীকে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশের সেই একই দাবি, অভিযুক্তদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।
আজ সকালে সারণ জেলার ছপরায় ছিতরবলিয়া গ্রামীণ ব্যাঙ্কে প্রায় ছ’জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালায়। ক্যাশিয়ারের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রায় ছ’লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তারা। পরে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। ডিআইজি ব্যাঙ্কের কর্মীদের জেরা করেন। তবে কারা এই কাণ্ডে জড়িত তা জানা যায়নি। অন্য দিকে, বাঁকা জেলার কেটলি মোড়ে কানাড়া ব্যাঙ্কেও এ দিন অস্ত্র-সহ চার দুষ্কৃতী হামলা চালায়। প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে বাইক চেপে পালায় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার রাজীব রঞ্জন নিজে পৌঁছে যান ব্যাঙ্কে। কোনও ক্ষেত্রেই কেউ গ্রেফতার হয়নি।
এরই পাশাপাশি, আজ সকালে জম্মু থেকে হাওড়াগামী ডাউন হিমগিরি এক্সপ্রেসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পটনা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে, হরদাসবিঘা স্টেশনে রাত আড়াইটে নাগাদ দুষ্কৃতীরা লুঠপাট করে চেন টেনে নেমে যায়। যাত্রীদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। প্রথমে জিআরপি ঘটনার কথা স্বীকার করতে চায়নি। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ চেন টেনে থামানোর কথা সামনে আনতেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। মোকামা স্টেশনে ট্রেনযাত্রী, জালন্ধরের বাসিন্দা সর্দার প্রভজিৎ সিংহ একটি এফআইআর-ও দায়ের করেন। তবে রেল পুলিশের বক্তব্য, এক জন যাত্রীর মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনিই অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কাল রাতে পশ্চিম চম্পারণের বেতিয়ায় আইনজীবী অশ্বিনীকুমার মিশ্রের বাড়ির কর্মচারী শ্যামদেব গিরি (৬৫)-কে গুলি করে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। বেশ কিছু দিন ধরেই ওই আইনজীবীকে ভয় দেখানো হচ্ছিল। এসডিও অফিসের কাছেই ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় ‘রয়্যাল গ্রুপ’ নামে এক দুষ্কৃতী দলের যোগ রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। কয়েক দিন ধরেই শহরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে প্রকাশ্যে গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে এই দলটি। তবে পুলিশ এই দলের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ছাড়াও সহরসার সদর থানার পুরব বাজার এলাকায় জমি মাফিয়ারা এক দম্পতির উপরে হামলা চালায়। গুরুতর জখম অবস্থায় দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সিওয়ানের মেরবা থানার বাজারে দিনেদুপুরে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করেছে দুষ্কৃতীরা। তাঁকেও গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
একের পর এক ঘটনায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী বিজেপি। রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, তাঁরা বার বারই বলে আসছেন জঙ্গলরাজের কথা। জোট শরিকদের একটি অংশের মদতেই এমন হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।