দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: পিটিআই।
অহমদাবাদের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্সও ক্ষতিগ্রস্ত। তথ্য উদ্ধার করতে তা বিদেশে পাঠানো হতে পারে। সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। তাদের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকারই।
বিমানে দু’টি যন্ত্র থাকে। একটিকে ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) বলে। তার কাজ ককপিটের কথাবার্তা সংরক্ষণ করা। আর দ্বিতীয় যন্ত্রটি হল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর)। উড়ান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাতে সংরক্ষিত থাকে। এই দু’টি যন্ত্রকেই একত্রে ব্ল্যাক বক্স বলে। কোনও বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়লে এই ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষা করেই তার কারণ জানা যায়। অহমদাবাদে দুর্ঘটনার কবলে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটির ব্ল্যাক বক্সও উদ্ধার করা হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ব্ল্যাক বক্সটিকে যে অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, তা থেকে তথ্য উদ্ধার করা একটু কঠিন। তাই সেটিকে আমেরিকায় পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে। অভিশপ্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্সটিকে ওয়াশিংটন ডিসির ‘ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেফটি বোর্ড’-এ পাঠানো হতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে অনুমতি দিলে তবেই।
গত ১২ জুন বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ব্রিটেনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ উ়ডান। বোয়িং সংস্থার এই ড্রিমলাইনার বিমানে এর আগে বড়সড় দুর্ঘটনা হয়নি। কিন্তু সে দিন রানওয়ে ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি ভেঙে পড়ে। মুহূর্তে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারপাশ। বিমানে আগুন ধরে যায়। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে ২৪২ জন ছিলেন। ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়। তাঁদেরই এক জন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থলেও অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২৭৪। ঘটনার পরের দিনই ‘এফডিআর’ পাওয়া গিয়েছিল। যে বাড়িতে বিমানটি ধাক্কা খায়, সেটি ছিল ডাক্তারদের হস্টেল ভবন। তার ছাদ থেকে সেটি উদ্ধার করা হয়। বিমান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাতে রেকর্ড করা থাকে। তার চার দিনের মাথায় উদ্ধার হয় ‘সিভিআর’।
প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পিকে মিশ্র রবিবার অহমদাবাদের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সোমবার ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের পর তাঁর কাছেও খবর গিয়েছে। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই)। তারা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিবের সঙ্গে তাদের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই বৈঠকে। কেন্দ্রীয় সরকারের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক অহমদাবাদের দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। তিন মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে।