National News

ফের ওড়িশা! কোমর ভেঙে দিয়ে দুমড়ে বাঁশে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হল দেহ

ওড়িশার কালাহান্ডির হতদরিদ্র দানা মাঝির ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। অর্থের অভাবে শববাহী গাড়ি জোগাড় করতে না পারায় স্ত্রীর দেহ কাঁধে ফেলে ১২ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার ছবি এখনও অমলিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ১৩:৩৭
Share:

এই ভাবই বাঁশে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সালামণি বারিকের দেহ।

ওড়িশার কালাহান্ডির হতদরিদ্র দানা মাঝির ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। অর্থের অভাবে শববাহী গাড়ি জোগাড় করতে না পারায় স্ত্রীর দেহ কাঁধে ফেলে ১২ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার ছবি এখনও অমলিন। এ বার আরও একটি ভয়ানক ছবি দেখল গোটা দেশ। এ বারেও সেই ওড়িশা। ঘটনাস্থল বালেশ্বর।

Advertisement

গত বুধবার বছর ছিয়াত্তরের সালামণি বারিক নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয় ট্রেনের ধাক্কায়। তাঁর দেহ উদ্ধার করে বালেশ্বরের সোরোতে একটি কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে দেহ ফেলে রাখা হয়। কারণ ময়নাতদন্তের কোনও ব্যবস্থাই সোরোতে ছিল না। ময়নাতদন্ত করার জন্য দেহ ৩০ কিমি দূরে শহরে নিয়ে যেতে হবে। এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু এর পরের যে ঘটনা তা সত্যিই ‘অমানবিক’ বললে কম হয়। দেহ নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। কী ভাবে অত দূরে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে? রেলপুলিশ ট্রেনে করে সালামণির দেহ নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এখানেও তৈরি হয় সমস্যা। ট্রেনে করে নিয়ে যেতে গেলে স্টেশন পর্যন্ত দেহ নিয়ে যেতে হবে। অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজেও পাওয়া যায়নি গোটা সোরোতে। অটোতে করে দেহ নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বিশাল ভাড়া হাঁকিয়ে বসেন চালক। অত টাকা খরচ করবে কে? তাই শেষমেশ পুলিশ দু’জন সাফাইকর্মীকে বলে, যে কোনও উপায়ে দেহটি স্টেশনে পৌঁছে দিতে হবে। এই টানাপড়েন যখন চলছে, তত ক্ষণে সালামণির দেহ ইটের মতো শক্ত হয়ে গিয়েছে। ২ কিমি রাস্তা পায়ে হেঁটে ওই দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হল ঠিকই, কিন্তু এর জন্য যে উপায় বের করলেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা তা সত্যিই ভয়ানক। সালামণির দেহের উপর দাঁড়িয়ে চাপ দিয়ে তাঁর কোমর ভেঙে দেওয়া হল! তার পরে দেহটি মুচড়ে একটা প্লাস্টিকে মুড়ে বাঁশে বেঁধে রেলস্টেশনে নিয়ে যাওয়া হল!

বৃদ্ধার ছেলের অভিযোগ, “মায়ের দেহ দুমড়ে মুচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি কিছু করতে পারিনি। অসহায়ের মতো গোটা ঘটনাটা দেখতে হয়েছিল। এই অন্যায়ের বিচার চাই কর্তৃপক্ষের কাছে।”

Advertisement

সালামণির দেহ কেন এ ভাবে নিয়ে যাওয়া হল তা নিয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কাছে জবাব চেয়েছে রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন।

দু’দিন আগেই এই ওড়িশার কালাহান্ডির দানা মাঝির ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। হতদরিদ্র দানা মাঝি স্ত্রীর চিকিত্সা অনেক কষ্টে করিয়েছিলেন। বাঁচাতে পারেননি। স্ত্রীর দেহ বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য অর্থটুকুও ছিল না তাঁর কাছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে মাথা ঠুকেও কোনও লাভ হয়নি। কেউ সাহায্যের হাতটুকুও বাড়িয়ে দেয়নি দানা মাঝির স্ত্রীর দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। অগত্যা নিজেই স্ত্রীর দেহ কাপড়ে মুড়ে কাঁধে ফেলে হাসপাতাল থেকে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, ন্যূনতম পরিষেবাটুকুও দিতে অপারগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?

দানা এবং সালামণির ঘটনা ফের এক বার বেআব্রু করে দিল সভ্যতার বড়াইকে!

আরও খবর...

রজত জয়ন্তী, তবু শুরু হয়নি কাজ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন