অভিযান: জঙ্গি হামলার দ্বিতীয় দিনে সুঞ্জওয়ান সেনা শিবিরের ভিতরে জওয়ানেরা। প্রস্তুত সাঁজোয়া গাড়িও। রবিবার জম্মুতে। ছবি: এএফপি।
সেনা গোড়াতেই জানিয়েছিল, সময় লাগবে। দু’দিন পরেও সুঞ্জওয়ানের সেনা শিবিরে জঙ্গি দমন অভিযান শেষ হল না। আজ দিনের শেষে হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন সেনা। খতম হয়েছে চার জঙ্গিও। তদন্ত শুরু করতে জম্মুতে পৌঁছে গিয়েছে এনআইএ-র দল। অন্য দিকে এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান।
গত কাল ভোরে সুঞ্জওয়ানের সেনা শিবিরে ঢুকে পড়েছিল জইশ ই মহম্মদের জঙ্গিরা। সেনাদের পরিবার ঘাঁটির যে অংশে থাকে সেখানেই আত্মগোপন করেছিল তারা। ফলে আটকে পড়া সেনা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বাঁচিয়ে জঙ্গি দমনের কাজ করতে হচ্ছে বাহিনীকে। আজ ঘাঁটির ওই অংশে অভিযান চালানোর সময়ে এক জন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, দুই জওয়ান ও এক সেনার বাবার মৃতদেহ পেয়েছেন প্যারা কম্যান্ডোরা। কোনও জঙ্গির লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা পুরোপুরি নষ্ট করতে ওই অংশটি রাতে মর্টার শেল দিয়ে উড়িয়ে দেয় সেনা।
বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, আজ হাবিলদার হাবিবুল্লা কুরেশি, নায়েক মনজুর আহমেদ, ল্যান্স নায়েক মহম্মদ ইকবালের দেহ পাওয়া গিয়েছে। নিহত হয়েছেন ল্যান্স নায়েক ইকবালের বাবাও। গত কাল সুবেদার মদনলাল চৌধুরি ও সুবেদার মহম্মদ আশরফ মিরের দেহ উদ্ধার করেছিলেন কম্যান্ডোরা। লেফটেন্যান্ট কর্নেল রোহিত সোলাঙ্কি-সহ আহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১১। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মহিলা ও শিশুরাও।
জওয়ান নাজির আহমেদ ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীও হামলায় আহত হন। পরে সাতওয়ারির সেনা হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন নাজিরের স্ত্রী। ১৪ বছরের এক কিশোরের মাথায় গুলি লেগেছে। তার পরিস্থিতিও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন সেনা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আজ শোপিয়ানের চিল্লি পোরাতেও সেনা শিবির লক্ষ করে গুলি চালায় জঙ্গিরা। সেনা জবাব দিলে তারা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন জম্মুতে টাইগার ডিভিশনের সদরে আসেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। আগামিকাল সুঞ্জওয়ান ঘাঁটিতে যেতে পারেন তিনি। আজ জম্মুতে এনআইএ-র গোয়েন্দাদের হাতে জঙ্গিদের অস্ত্রশস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।
এখনও সুঞ্জওয়ানের ঘটনায় পাক সরকারের জড়িত থাকা নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি ভারত। কিন্তু পাকিস্তান আজ এমন যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। পাক বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ভারতে সরকার ও সংবাদমাধ্যমের একাংশ আগেই পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলে। কাশ্মীরে ‘অত্যাচার’ থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই এ কাজ করা হয়।
এই হামলার নিন্দা করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘গোটা দেশ সেনার পাশে রয়েছে।’’