দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যেতে হল করিমগঞ্জ জেলা সমাজকল্যাণ বিভাগের ‘বড়বাবু’ দেবাশিস মালাকারকে। করিমগঞ্জের এসিজেএম তাঁকে ৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার পাশাপাশি ১৪ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছেন। টাকা দিতে না পারলে আরো ৩ বছর হাজত বাস করতে হবে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে ২০১০ সালে সমাজকল্যাণ বিভাগের আধিকারিকের দায়িত্বে থাকা এসিএস আধিকারিক অরূপ পাঠকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা করেছে আদালত।
করিমগঞ্জ জেলা সমাজকল্যাণ বিভাগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। দুঃস্থ মানুষদের নামে আসা টাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, এমনকী সরকারি কর্মীরাও তুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ ছিল। ২০১০ সালে ৭০০ টাকা করে স্বাস্থ্য ভাতার নামে কয়েক লক্ষ টাকা আসে। সেখান থেকে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার ৭০০ এবং ৩ লক্ষ ৫০ হাজার ৭০০ টাকার দু’টি চেক বানিয়ে ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নেন বড়বাবু দেবাশিস মালাকার। সেলফ চেকের বিনিময়ে টাকা তুলে নেওয়া হলেও সে সময় সমাজকল্যাণ বিভাগের দায়িত্বে থাকা এসিএস আধিকারিক অরূপ পাঠক জেনেও না জানার ভাণ করেন।
সে সময়ে কিছু দিন সমাজকল্যাণ আধিকারিকের দায়িত্ব নেন অপর এক এসিএস আধিকারিক পি বি রায়। তিনি দুর্নীতির বিষয়ে জানতে পেরে অরূপ পাঠককে অবহিত করেন। পরে বিষয়টি দেখতে বলেন। এরই মধ্যে করিমগঞ্জ সমাজকল্যাণ আধিকারিকের কার্যালয়ে বিভাগীয় অডিট হয়। ধরা পড়ে ১৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৪০০ টাকার হদিশ নেই। সেই স্বাস্থ্য ভাতার টাকা কাদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে, তারও নথি ছিল না। চেকগুলি ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর ও ২১ অক্টোবর তারিখে ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে ভাঙানো হয়েছিল। চেকগুলিতে স্বাক্ষর ছিল অরূপ পাঠকের। সেলফ চেকে লক্ষ লক্ষ টাকা কী করে তুলতে দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন হতে থাকলে অরূপ পাঠক ২০১২-র ২৪ জানুয়ারি করিমগঞ্জ সদর থানায় বড়বাবু দেবাশিস মালাকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় করিমগঞ্জের এসিজেএম নূর আহমদ লস্কর আজ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।