নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে অসম জুড়ে যে বিভেদের আবহাওয়া তৈরি হয়েছে এবং বাঙালিদের বিরুদ্ধে যে ভাবে জনমত গড়ে তোলা হচ্ছে, তা থামাতে আসরে নামল অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন। অসমিয়া ও বাঙালি সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে আজ এক সমাবেশ করল ছাত্র ফেডারেশন। এর পর বিলের বিরোধিতায় সরব সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করবে তারা।
সরকারের কাছে ফেডারেশনের আর্জি, ইংরেজিতে থাকা ওই বিলটি নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন ইচ্ছাকৃত ভাবে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। তা ঠেকাতে বিলটি অসমিয়া ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হোক। তাদের বক্তব্য, শুধু বাঙালি নয় ওই সংশোধনীর সুবিধা চাকমা, রাভা, কোচরাও পাবেন। সংগঠনের যুক্তি ওই বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া আছে। তার পরেও বলা হচ্ছে দলে দলে বাংলাদেশের হিন্দুরা বিল পাশ হলেই অসমে ভিড় করবেন। তাদের বক্তব্য, দেড় কোটি বাঙালি নাগরিকত্ব পাবেন বলে যাঁরা দাবি করছেন, তাঁরা মনগড়া সংখ্যা নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন। সরকারি তথ্য বলছে রাজ্যের ১৪ জেলায় হিন্দু তথা ভূমিপুত্ররা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। এইচ এস ব্রহ্ম কমিটির রিপোর্টে জমি বেহাত হওয়ার সব তথ্য দেখানো হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের কোথাও হিন্দু বাঙালির জমি জবরদখল করার তথ্য নেই। এনআরসি প্রকাশ হলেই রাজ্যে বিদেশির সংখ্যা পাওয়া যাবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা হোক।
ফেডারেশনের সভাপতি দীপক দে বলেন, ‘‘বড়ো, ডিমাসা, কার্বিরা নিজেদের ভাষায় কথা বলেও অসমিয়া। কিন্তু বাঙালিরা কেন তা হতে পারে না? ১৯৭১ সালের পরে রাজ্যে একটিও বাংলা স্কুল খোলা হয়নি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, বিলে রাজ্যের পক্ষে আপত্তিকর কিছু থাকলে আইনি পথেই তার মোকাবিলা সম্ভব। অসমের বাঙালিরা অসম-বিরোধী কাজেই সায় দেবেন না। বাংলা তাঁদের মাতৃভাষা। মাতৃভূমি অসমই।