তিন প্রধানের সঙ্গে বৈঠক রাজনাথের, চর্চা ছবি নিয়ে

ঘটনা হল, প্রতি সপ্তাহে এক বা একাধিক বার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাহিনী-প্রধানেরা। সেই ছবি অধিকাংশ সময়েই সামনে আসে না। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র আজ সকালে একটি ছবি টুইট করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৮
Share:

আলোচনা: বায়ু, জল ও স্থল বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে রাজনাথ সিংহ। সোমবার দিল্লিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাসভবনে। পিটিআই

প্রায় প্রতিদিনই উত্তেজনা সীমান্তে। উপত্যকায় জঙ্গি হামলার ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। এরই মধ্যে আগামী ৩১ অক্টোবর রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীর। ফলে গোটা সপ্তাহেই সীমান্তে ও উপত্যকায় বড় মাপের জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছে কেন্দ্র। হামলা রুখতে সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিন বাহিনীর প্রধান। প্রসঙ্গত, আজই উত্তর কাশ্মীরের সোপোরে গ্রেনেড হামলায় এক মহিলা-সহ জখম হন কুড়ি জন। অনন্তনাগে রাতে হত্যা করা হয় এক ট্রাকচালককে।

Advertisement

ঘটনা হল, প্রতি সপ্তাহে এক বা একাধিক বার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাহিনী-প্রধানেরা। সেই ছবি অধিকাংশ সময়েই সামনে আসে না। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র আজ সকালে একটি ছবি টুইট করেন। যাতে দেখা যায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত, নৌসেনা প্রধান কর্মবীর সিংহ, বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়া। হঠাৎ আজ কেন সেই ছবি সামনে আনা হল, তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। শুধু জানানো হয়েছে, মূলত সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রক সূত্রে খবর, পাকিস্তানের সেনা যে ভাবে ফি দিন জঙ্গিদের প্রবেশে মদত দিয়ে যাচ্ছে, তা রুখতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি পাক হামলা হলে ভারতীয় বায়ু ও নৌসেনার প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, সীমান্তে কড়া পাহারা সত্ত্বেও পাক জঙ্গিরা যে ভারতে ঢুকছে, তা গত কয়েক দিনের হামলা থেকেই স্পষ্ট। তাঁদের মতে, উপত্যকার জঙ্গিরা এখন অস্তিত্ব প্রমাণে ‘মরিয়া’। সেই কারণে সেনা-আধা সেনার পাশাপাশি এখন সাধারণ মানুষকেও নিশানা বানাতে পিছপা হচ্ছে না জঙ্গিরা। যা আগে হত না। শনিবার শ্রীনগরের কাছে কর্ণনগর এলাকা, গত কাল শ্রীনগরে লালচকের কাছে হরি সিংহ বাজারে গ্রেনেড, তার পরে আজ সোপোর টাউনে বাস স্ট্যান্ডে গ্রেনেড ছোড়া থেকেই স্পষ্ট, জঙ্গিরা উপস্থিতি জানান দিতে চাইছে। যা চিন্তায় ফেলেছে গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।

Advertisement

ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের অবশ্য ব্যাখ্যা, প্রশাসনের ভাবমূর্তি তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের ছবি প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের ঘরোয়া, পারিবারিক বা দৃঢ়চেতা ভাবমূর্তি তুলে ধরতে যেমন বিভিন্ন ‘মুডের’ (রবিবারই যেমন বাগদাদি হত্যার অভিযানের সময় সিচুয়েশন রুমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে) ছবি প্রকাশ করা হয়, মোদী জমানাতেও তেমন ভাবমূর্তি তৈরিতে ছবির ব্যবহার বেড়েছে। কাশ্মীরে যাওয়ার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাংসদদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রকাশ যেমন সেই কৌশলের অঙ্গ, তেমন রাজনাথের বৈঠকের এই ছবি প্রকাশ করেও পাকিস্তানকে এবং দেশের মানুষকেও বার্তা দিতে চাওয়া হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন