ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সীমান্তপারের সন্ত্রাস নিয়ে ভারত বার বার অভিযোগ তুলে এসেছে। কিন্তু নয়াদিল্লির এই উদ্বেগের বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে কোনও উল্লেখ ছিল না সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন-এর (এসসিও) বিবৃতিতে। তাই ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষরই করলেন না ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা পিটিআই।
আন্তর্জাতিক মঞ্চ এসসিও মূলত সদস্যরাষ্টগুলির ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করে। ঘটনাপরম্পরা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাধিক ব্যক্তির থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পিটিআই জানিয়েছে, ওই বিবৃতিতে রাজনাথ অনুমোদন না-দেওয়ায় কোনও যৌথ বিবৃতি ছাড়াই এসসিও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলন শেষ হয়। এ বারের এসসিও সম্মেলন হচ্ছে চিনে। বুধবার ওই সম্মেলনে নাম-না করে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানকে নিশানা করেন রাজনাথ। বস্তুত, দশ দেশের আন্তর্জাতিক মঞ্চ এসসিও-র অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ মুহাম্মদও ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
এসসিও সম্মেলনে বক্তৃতার সময়ে রাজনাথ স্পষ্ট করে দেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দু’মুখো আচরণের কোনও জায়গা নেই! যারা সন্ত্রাসবাদকে নিজেদের সঙ্কীর্ণ স্বার্থপূরণের উদ্দেশ্যে প্রশ্রয় দেয় এবং ব্যবহার করে, তাদের এর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও এসসিও সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দেন রাজনাথ। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির লড়াইয়ের বার্তা স্পষ্ট করে দিয়ে তিনি বলেন, “এই লড়াইয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাঁরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দু’মুখো আচরণ করে, সেই দেশগুলির সমালোচনা করতে এসসিও-র কোনও দ্বিধা থাকা কাম্য নয়।”
বস্তুত, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হানায় পাকিস্তানের যোগ রয়েছে বলে শুরু থেকে অভিযোগ তুলে আসছে ভারত। যদিও ইসলামাবাদ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে যাচ্ছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ, পহেলগাঁওয়ের হামলায় জড়িত জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকেই এ দেশে এসেছিল।
বুধবার এসসিও সম্মেলনে বক্তৃতায় ফের পহেলগাঁও কাণ্ডের কথা তুলে ধরেন রাজনাথ। তিনি জানান, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে যে ধরনের জঙ্গিহানা দেখা গিয়েছে, তার সঙ্গে ভারতে অতীতে লশকর-এ-ত্যায়বার জঙ্গিহানার ধাঁচ মিলে গিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার সময়ে ধর্মীয় পরিচয় দেখে নিহতদের গুলি করা হয়েছিল। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট। এরা হল রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বারই একটি ছায়া সংগঠন।”