অসুস্থ: ছাত্রীদের শুশ্রূষা চলছে নয়াদিল্লির হাসপাতালে। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
প্রথমে ৫০। তার পর ১০০-৩০০-৪০০-৪৫০! বেলা যত গড়াল, দিল্লিতে গ্যাস লিকের ঘটনায় অসুস্থ ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ল লাফিয়ে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ল আতঙ্ক আর উদ্বেগ।
স্কুল দু’টিতে তখন সবে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। আচমকা দু’টি স্কুলই ভরে গেল গ্যাসের ঝাঁঝালো গন্ধে। চোখ জ্বালা এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গেল ছাত্রীদের।
শনিবার দিল্লির তুঘলকাবাদ এলাকার রানি ঝাঁসি স্কুল এবং গর্ভনমেন্ট গার্লস সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের কাছে গ্যাসের গুদামের একটি কন্টেনারে ছিল ‘ক্লোরোমিথাইল পাইরিডিন।’ রাসায়নিকটি কীটনাশক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সেই গ্যাস লিক করে অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে দুই স্কুলের ছাত্রীরা। তারা জানায়, গ্যাসের ঝাঁঝালো গন্ধে তাদের চোখ আর গলা জ্বালা করছে। দম বন্ধ হয়ে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে প্রায় ১০০ জন অসুস্থ ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৪৫০ ছুঁয়ে ফেলে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপাল গাঁধীর নাম নিয়েও চর্চা
বেশির ভাগ ছাত্রীরই বয়স ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। বাতরা হাসপাতালে ভর্তি ৬২ জন। সকলেই স্থিতিশীল। ১০৭ জন ছাত্রী ভর্তি মাজিথিয়া হাসপাতালে। অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের ওখানে ৪২ জন পড়ুয়া এবং এক ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কয়েক জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ ছাত্রীরা যাতে দ্রুত চিকিৎসা পান, তার জন্য সকলকে তৈরি থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা। যে কোনও রকম পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য এইমসের কয়েক জন চিকিৎসককে নিয়ে একটি দলও গঠন করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং পরিবেশ রক্ষা আইনে এফআইআর দায়ের হয়েছে। গ্যাস লিকের কারণ জানতে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। দু’টি স্কুলের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
ইএসআই হাসপাতালে অসুস্থ ছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বাইজল এবং বিরোধী নেতা বিজেন্দ্র গুপ্ত। বিজেন্দ্রর কথায়, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে গাফিলতি হয়েছে। স্কুল শুরুর আগেই গ্যাস লিক করার সঙ্কেত মিলেছিল। তার পরেও কেন ছাত্রীদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হল?’’
যে গ্যাসটি ছড়িয়ে পড়ে, সেটি আনা হয়েছে চিন থেকে। নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল হরিয়ানার সোনপতে। পুলিশ সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তাদের কাছে ফোন আসে যে তুঘলকাবাদ এলাকায় গ্যাস লিক হয়েছে। ফাঁকা করে দেওয়া হয় দু’টি স্কুল এবং আশপাশের এলাকা।