লঙ্গরখানায় খাবার পরিবেশনে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। ছবি: টুইটার।
নোট সঙ্কটে আমজনতার পাশে দাঁড়াতে লঙ্গরখানা খুলল দিল্লি সরকার। রাজধানীর দশটি জায়গার লঙ্গরখানা থেকে দিনে তিনবেলা বিনা মূল্যে খাবার বিলি করা হবে। খুচরো সঙ্কটে নাজেহাল মানুষের সমস্যা মেটাতেই সোমবার থেকে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে রাজ্য প্রশাসনের দাবি। যদিও আপ সরকারের এই উদ্যোগের পিছনে অনেকেই রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন।
গত ৮ নভেম্বর কালো টাকা রুখতে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর থেকেই খুচরোর সমস্যায় নাজেহাল আমজনতা। ব্যাঙ্ক-এটিএমের সামনে নিত্যদিনই লম্বা লাইন। তবে দীর্ঘ ক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না নতুন নোট। ফলে আমজনতার ভোগান্তি বেড়েছে বই কমেনি। নরেন্দ্র মোদীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অন্যান্য বিরোধী দলগুলির মতোই সরব দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। মোদী সরকারের এই উদ্যোগের পিছনে আসলে কোনও বড়সড় ‘দুর্নীতি’ রয়েছে, এমন অভিযোগও করেছেন কেজরীবাল। তবে কি রাজনীতির ঘর গুছোতেই লঙ্গরখানা খুলে নিজেদের জনদরদী প্রমাণে মরিয়া আপ সরকার? অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। টুইটারে মণীশের দাবি, “ডিমনিটাইজেশনের ফলে গরীব মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছেন। তাঁদের বাঁচাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন
নোট-আকালে গ্রামে ফেরার উলটপুরাণ
যদিও দিল্লি সরকারেই এই উদ্যোগ অভিনব নয়। উত্তর ভারতের বহু গুরুদ্বারেই বিনা পয়সার দু’বেলা খেতে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষত, ভিন্ রাজ্যের পড়ুয়াদেরই দেখা মিলছে গুরুদ্বারের লঙ্গরখানাগুলিতে। দিল্লির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, খুচরো সঙ্কটের ফলে বাজার-হাট করতে রীতিমতো সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। খুচরোর অভাবে ফুটপাথের খাবারের স্টল বা ক্যাফেটেরিয়াতেও যাতায়াত বন্ধ তাঁদের। দ্বিতীয় বর্ষের সাহিত্যের ছাত্রী নেহা বাসওয়ানি বলেন, “বাড়ি ভাড়া দেওয়ার পর হাতের টাকা প্রায় শেষ। কারণ, কোনও বাড়িওয়ালাই চেকে ভাড়া নিতে রাজি নন।” প্রতি দিনের খাওয়াদাওয়াও তাই এখন গুরুদ্বারেই চলছে নেহাদের মতো বহু পড়ুয়ার। নেহা বলেন, “আমরা অনেকেই বইখাতা নিয়ে লাঞ্চ সারতে গুরুদ্বারে চলে যাই।” মোতি বাগের এক গুরুদ্বারের ম্যানেজার কাশ্মীর সিংহ বলেন, “পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকেন এমন বহু পড়ুয়ার এখানে আসছেন।”